ক্ষমতালিপ্সু ও উচ্চাভিলাসী সামরিক অফিসারদের একটি গ্রæপ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ক্ষমতা দখল করে। সামরিক অফিসারদের এই ক্যূ-ক্ষমতা দখল-পাল্টা দখলের খেলায় ৩ নভেম্বর আরেক উচ্চাভিলাসী সামরিক অফিসার খালেদ মোশাররফ ক্যূ করে ক্ষমতা দখল করে। খালেদ মোশাররফ তার নিজের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে সামরিক শাসন জারি করে এবং পাকিস্তানপন্থী বিচারপতি সায়েমকে রাষ্ট্রপতি বানায়। শুধু তাই নয় খালেদ মোশাররফ খুনী মোস্তাককে গ্রেফতার না করে বঙ্গবন্ধু ও চার জাতীয় নেতার খুনীদের সমঝোতার মাধ্যমে নিরাপদে দেশ ত্যাগ করার সুযোগ করে দেয়।
সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষ্যে ৭ নভেম্বর রবিবার, বিকাল ৪টায়, কক্সবাজার শহরের লালদীঘির পাড়স্থ জাতীয় বীর কাজী আরেফ আহমদ মিলনায়তনে জাসদ কক্সবাজার জেলা কমিটি আয়োজিত ও জেলা জাসদ সভাপতি নইমুল হক চৌধুরী টুটুল এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- জেলা জাসদ সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ হোসাইন মাসু, সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট রফিক উদ্দিন চৌধুরী, শহর জাসদ সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ, সহ-সভাপতি সাংবাদিক এম. আমান উল্লাহ, জাসদ নেতা প্রবাল পাল, সাংবাদিক মোঃ আমান উল্লাহ, জাতীয় যুব জোট, কক্সবাজার জেলা সভাপতি অজিত কুমার দাশ হিমু, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা সভাপতি আবদুল জব্বার, সাধারণ সম্পাদক আসাদুল হক আসাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাখাওয়াত হোসেন সবুজ, সাংঠনিক সম্পাদক মোঃ কাইছার হামিদ, জাতীয় যুবজোট নেতা একরামুল হক কন্ট্রাক্টার, আবদুর রহিম, মোঃ আজম, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ আল সিফাত প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন- ক্ষমতালিপ্সু সামরিক অফিসারদের এই বিশৃঙ্খলায় সৃষ্ট চরম রাজনৈতিক সংকট ও অনিশ্চয়তা থেকে দেশকে বাঁচাতে, ক্যান্টনমেন্টগুলোতে খুনাখুনী-রক্তারক্তি বন্ধ করতে, সংবিধান লংঘন-অবৈধ ক্ষমতা দখল-হত্যা-ক্যূ-ষড়যন্ত্রের রাজনীতি বন্ধ করে দেশে সাংবিধানিক ধারা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে এবং ঔপনিবেশিক আমলের গণবিরোধী ব্যবস্থার পরিবর্তন করার লক্ষ্যে উচ্ছৃংখল অফিসারদের বিরুদ্ধে সিপাহীদের সুশৃংখল বিদ্রোহে কর্নেল আবু তাহের বীরউত্তমের নেতৃত্বে জাসদ সমর্থন দিয়েছিল। উচ্চাভিলাসী সামরিক অফিসাররা সংবিধান লংঘন করে চলছিল। এর বিপরীতে ৭ নভেম্বর সিপাহীরা সংবিধান সমুন্নত রাখার প্রচেষ্টা নিয়েছিল। কিন্তু জিয়া বিশ্বাসঘাতকতা করে জাসদ, কর্নেল তাহের ও সিপাহীদের এই প্রচেষ্টাকে ধ্বংস করে দেয়। জিয়া নিজের ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে পাকিস্তানপন্থীদের সাথে হাত মিলিয়ে পাকিস্তানের ট্রেনে উঠে যায় এবং দেশকে পাকিস্তানপন্থার দিকে ঠেলে দেয়।
বক্তারা বলেন, ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক সিপাহী-জনতা অভ্যুত্থানের মহানায়ক কর্নেল আবু তাহের বীর উত্তম, খলনায়ক জিয়া। যারা জিয়া বা খালেদের পক্ষে সাফাই গাইছেন তারা কার্যত সংবিধান লংঘন, অবৈধ ক্ষমতা দখল ও সামরিকতন্ত্রের পক্ষেই সাফাই গাইছেন। বক্তারা আরো বলেন- সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে সংবিধান লংঘন-অবৈধ ক্ষমতা দখল-হত্যা-ক্যূ-ষড়যন্ত্র-সামরিকতন্ত্রের রাজনীতির পুনরাবৃত্তি চিরদিনের জন্য বন্ধ করে দেয়া এবং ঔপনিবেশিক আমলের গণবিরোধী আইন-কানুন-বিধি-ব্যবস্থা পরিবর্তনের জন্য সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে জাসদের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24।।