খাগড়াছড়িতে সাংগ্রাই উৎসবে মেতেছেন মারমা জনগোষ্ঠী

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।।

ত্রিপুরাদের ‘বৈসু’ আর চাকমাদের ‘ফুল বিজ’ উৎসবের পর এবার খাগড়াছড়িতে সাংগ্রাই উৎসবে মেতেছেন মারমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণীরা। পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনগণের বৈসাবি উৎসবের রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে পাহাড়ি এ জনপদ। এ উৎসবে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে সাংগ্রাই।

মারমা জনগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব মাহা সাংগ্রাইং শুরু হয়েছে। রি-আকাজা (জলকেলি) একে অপরকে পানি ছিটিয়ে পুরাতন বছরের সব দুঃখ, কষ্ট, গ্লানি ভুলে গিয়ে নতুন বছরকে বরণ করেন তারা।

রোববার খাগড়াছড়ি জেলা সদরের পানখাইয়াপাড়া বটতলায় মারমা উন্নয়ন সংসদ মাঠে এই উৎসবের সূচনা হয়।

মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও বেলুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, মারমা ভাষা, চাকমা, ত্রিপুরা ভাষা ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের ভাষা আমাদের কাছে গৌরব। এই ভাষা ও সংস্কৃতি আমরা ধরে রাখতে চাই। এটি ধরে রাখার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করে চলেছেন। সকল সংস্কৃতির মাঝে ঐক্য বন্ধন সৃষ্টি করব।
নানা ধরনের প্রতিকৃতি নিয়ে শোভাযাত্রায় আসেন মারমা সম্প্রদায়ের মানুষ।

উদ্বোধন শেষে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় মারমার সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পড়ে অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রাটি শহরের শাপলা চত্বর হয়ে হাসপাতাল সড়ক ঘুরে পানখাইয়াপাড়া মারমা উন্নয়ন সংসদ মাঠে এসে শেষ হয়। পরে মারমা বিভিন্ন নৃত্য ও ওপেন কনসার্ট শুরু হয়।

সাংগ্রাই উৎসবের প্রধান আকর্ষণ ঐতিহ্যবাহী রি-আকাজা (জলকেলি) উৎসবে উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান। এরপর তরুণ-তরুণীরা দলবদ্ধ ভাগে বিভক্ত হয়ে রি-আকাজা (জলকেলি) উৎসবে উচ্ছাসে মেতে উঠেন।

মঙ্গল শোভাযাত্রায় নৃত্য পরিবেশন করছেন ম্রো নারীরা।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মারমা উন্নয়ন সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মংপ্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে জেলা পরিষদের জনসংযোগ কর্মকর্তা চিংলামং চৌধুরীর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান, খাগড়াছড়ি রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো. আমান হাসান, জেলা পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম (বার)।

এছাড়াও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, খাগড়াছড়ি জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্ণেল আবুল হাসাত, পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, জেলা পরিষদ সদস্য মংক্যচিং চৌধুরী, জেলা পরিষদ সদস্য ক্যজরী মারমা, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম, মারমা উন্নয়ন সংসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মংনু মারমা(বলে), বাঁশরী মারমা, নিংঅ মারমাসহ মারমা উন্নয়ন সংসদের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।

এফআর/অননিউজ

আরো দেখুনঃ