লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ডক্টর কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, সময় থাকতে সচেতন হোন। তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে জনগণকে রেহাই দিন। গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিন। সুশাসন ও ন্যায়বিচার কায়েম করুন। অন্যথায় সামনে বিপদ অপেক্ষা করছে। শনিবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর পূর্ব পান্থপথে এলডিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক প্রতিবাদ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
কর্নেল অলি বলেন, জনগণের মনোভাব বোঝার চেষ্টা করুন। তাহলে সঠিক উত্তর ও পন্থা পেয়ে যাবেন। ক্ষমতায় টিকিয়ে থাকার লোভ বিপদের কারণ হতে পারে। অতীত অভিজ্ঞতা তাই বলে। দেশে আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটেছে। কথায় কথায় মারামারি খুনোখুনি। সবার মধ্যে অস্থিরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রলীগ দ্বারা ছাত্রছাত্রী নির্যাতন ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড অহরহ ঘটছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় ইয়াবা কারবারিরা আলিশান জীবনযাপন করছে। তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে।
তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগেও আমি বলেছিলাম ঋণ খেলাপিরা অর্থনীতি ধ্বংস করবে। এখন দেখি ঋণ খেলাপি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। মধ্যবিত্ত ও গরিবের টাকা লুণ্ঠন করছে। দেশে এখন লুটপাটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে। অর্থ সংকটের কারণে গত ৭ মাসে এডিবি বাস্তবায়ন মাত্র ২৮ শতাংশ। শূন্য অগ্রগতি নিয়ে বছর পার ২৩৬ প্রকল্পের, যা বিগত ৭ বছরে সর্বনিম্ন। সরকারের মোট ঋণ সাড়ে ১৩ লাখ কোটি টাকা। তার মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৭৯৪ কোটি টাকা। ব্যাংক ঋণ ৪ লাখ ১৯ হাজার ৬২৭ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা। জিপিএফ থেকে ৬২ হাজার ৭৪০ কোটি টাকা, বিগত অর্থবছরে সুদ বাবদ ব্যয় ৭৫ হাজার কোটি টাকা। বর্তমান অর্থবছরে সুদ-বাবদ ব্যয় হবে ৭৩ হাজার কোটি টাকা। সুদে বিপুল অর্থ ব্যয়ের কারণে রাজস্ব হ্রাস পাচ্ছে। আমদানি-রপ্তানি হ্রাস পাচ্ছে। টাকার অবমূল্যায়ন ২৬ শতাংশ হয়েছে। এ সবকিছু বিবেচনা করলে বোঝা যায় অর্থনৈতিক অবস্থা সুখকর নয়।
কর্নেল অলি বলেন, বায়ুদূষণ-ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন মহানগরে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অতিক্রম করেছে। আগামী ৬ বছর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। ঢাকা প্রায় সময় বায়ুদূষণে ১ নম্বরে অবস্থান করে। এ অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য আমাদের সবাইকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। আবহাওয়া, অবৈধ অস্ত্র ও নাজুক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কাউকে ছাড় দেবে না।
তিনি বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা সর্বনিম্ন পর্যায়ে। দুর্নীতি অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। আমরা কি এই ধরনের স্বাধীন দেশ কায়েম করার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম? যুবসমাজকে কোনো সদুত্তর দিতে পারি না। তাদের জন্য আমরা কী দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করছি। কী ধরনের দেশ তাদের আমরা দিয়ে যাচ্ছি! ক্ষণিকের জন্য রেষারেষি ভুলে গিয়ে আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে স্বাধীনতার সুফল জনগণের জন্য নিশ্চিত করি।
শান্ত/অননিউজ