সারা দেশে কুমিল্লার বাহার নামেই বেশী পরিচিত কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। গরীব ও অসহায়দের কাছে যার পরিচিতি দানবীর বাহার নামে, কিছু কিছু বস্তি এলাকার মানুষ তাকে রাজা বাবু বলে ডাকেন।
১৯৮৪ সালে অত্যন্ত যুবক বয়সে প্রয়াত আফজল খানকে পরাজিত করে কুমিল্লা পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। নেতাকর্মী ও কুমিল্লার সাধারণ মানুষের ভলোবাসায় জনপ্রতিনিধি হিসেবে তখন থেকেই যার যাত্রা শুরু। এর পর থেকে কর্মী আর কুমিল্লার মানুষের সাথে তাঁর মেলবন্ধন তৈরি হয়। সেই থেকে কুমিল্লার মানুষকে ভালোবেসে রাজনীতির ৬০ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছেন কুমিল্লার মানুষের জন্য। কুমিল্লার মানুষ তাকে কুমিল্লার গণ মানুষের নেতা বলে থাকেন। পরপর দুই বার কুমিল্লা পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বর্তমানে টানা তিন বার নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য।
সাধারণ মানুষ আর নেতাকর্মীদের কষ্ট তিনি অনুভব করতে পারেন। নেতাকর্মীরাও তাকে ভালোবাসেন অন্ধের মতো। রাজপথে যখনই লড়াই করতে হয়েছে এমপি বাহারের নেতাকর্মীরা সবসময় তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে প্রমাণ রেখেছেন। সেই কর্মীদের কষ্ট তিনি সহ্য করতে পারেন না। সারা বছর বিভিন্নভাবে নেতাকর্মীদের সাহায্য সহযোগিতা করে থাকেন। কাউকে ছোট ব্যবসায়, ঠিকাদারি কাজ, চাকরি, চিকিৎসা সহায়তা, আর্থিক সহায়তা সহ নানাভাবে চেষ্টা করেন কর্মীদের পাশে থাকার জন্য। বিশেষ করে প্রতিটি ঈদে এমপি বাহার ওয়ে উঠেন দরদি ও উদার। নেতাকর্মীরা যাতে পরিবারের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে উদযাপন করতে পারেন সেজন্য তিনি থাকেন অত্যন্ত নিবেদিত। ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পাড়া ভিত্তিক তিনি অসহায় মানুষের লিষ্ট তৈরি করে আর্থিক সহায়তা করে থাকেন। তাছাড়া নেতার্মীদেরও তালিকা করে ঈদ উপহারের টাকা দিয়ে থাকেন। করোনা মহামারিতে তিনি কুমিল্লার সাধারণ মানুষের পাশে দাড়িয়ে সারা দেশে আলোচিত হয়েছিলেন। অপরদিকে সম্প্রতি রাজধানী ঢাকার বঙ্গবাজারে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের প্রথমে ২৬ লাখ টাকা এবং পরবর্তীতে আরো ছয় লাখ টাকা সহ মোট ৩২ লাখ টাকার সাহায়তা দিয়ে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। পাশাপাশি দেশের অন্যান্য বত্তিবানদেরও এগিয়ে আসার আহবান জানান।
কুমিল্লা মহানগর ও আদর্শ সদর উপজেলার প্রতিটি কোনায় কোনায় অসহায় ও দু:স্থ মানুষের কাছে খাদ্য সহায়তা পাঠিয়েছিলেন। অপরদিকে শুক্রবার এলেই বিভিন্ন এলাকা থেকে গরীব অসহায় মানুষ ভিড় করেন নগরীর মুন্সেফ বাড়িতে। তাদের বিশ্বাস এমপি বাহার কুমিল্লায় থাকলে তাদের কখনো খালি হাতে ফেরাবেন না। যাকাত ফান্ড থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার নারী পুরুষকে লুঙ্গি, শাড়ি, থ্রিপিছ বিলিয়েছেন। তাদের সবাই কুমিল্লা-৬ আসনের না। কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা থেকে এসেছেন তারা। প্রতিবছরই তারা মুন্সেফ বাড়ি থেকে এমপি বাহারের কাছ থেকে নতুন কাপড় পেয়ে থাকেন বলে সেই বিশ্বাসেই ভিড় জমান। দিন দিন সেই ভিড় বেড়েই যাচ্ছে।
এদিকে ঈদকে সামনে রেখে তাঁর দানের হাত আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের অসহায় ও গরীব নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের তালিকা করে প্রায় ১৪শ মানুষকে পাঁচ হাজার টাকা করে ঈদ উপহার বিতরণ করেছেন। আদর্শ সদর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন থেকে ৬০০জনের নামের তালিকা করা হয়েছে। কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের ১৬০জন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৬০০জন নেতাকর্মী, ছাত্রলীগের ১৫০জন, কৃষকলীগের ১৫০জন, যুব মহিলা লীগের ৮১জন, করাতকল শ্রমিক১১০জন, ডেকোরেটর কর্মচারী ২৫জন, শ্রমিকলীগের ১৬০জনের তালিকা করে ঈদ উপহার বিতরণ চলছে। তালিকাভূক্ত প্রতিজনকে সর্বনিম্ন দুই হাজার থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়েছেন।
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগ নেতা জহিরুল কামাল বলেন, প্রায় ত্রিশ বছর ধরে আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার নেতাকর্মীদের তাঁর সাধ্য অনুযায়ি ঈদের উপহার দিয়ে থাকেন। তিনি আসলে আনন্দ ভাগাভাগি করতে পছন্দ করেন। কর্মীদের মুখে হাসি দেখলে তিনি শান্তি পান। নেতার এমন উদারতা দেখে আমরাও পুলকিত হই, অনুপ্রাণিত হই। নেতা নিজ হাতে আমাদের ঈদ উপহার দিয়েছেন এর চেয়ে আনন্দ আর কি হতে পারে?
মহানগর আওয়ামীলীগের আরেক নেতা হাবিবুস সায়েরিন সায়ের বলেন, দু:খ শেয়ার করলে দু:খ কমে আর আনন্দ ভাগাভাগি করলে আনন্দ বাড়ে। এমপি মহোদয় প্রতিবছরই ঈদের সময় নেতাকর্মীদের ঈদ শুভেচ্ছা হিসেবে দুই থেকে ত্রিশ হাজার টাকা পর্যন্ত একেক জনকে ঈদ উপহার দিয়ে থাকেন। এইগুলো আর্থিক সহায়তা নাহ, ঈদ উপহার। এমপি মহোদয় ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এসব ঈদ উপহার দিয়ে থাকেন। গরীব অসহায় কর্মীদের এবং সাধারণ মানুষকে তাঁর আলাদা যাকাত ফান্ড থেকে সাহায্য করে থাকেন।
২০ এপ্রিল দুপুরে কুমিল্লা মহানগর স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে ঈদ উপহারের নগদ টাকা বিতরণ করা হয়।
এসময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে এমপি বাহার বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর কর্মী। আমি গণমানুষের রাজনীতি করি। আমি প্রতিবছরই চেষ্টা করি নেতাকর্মীদের ঈদ উপহার দেয়ার জন্য। এবছর আমি নেতাকর্মীদের তালিকা করে মহানগর আওয়ামীলীগের অফিসে এনে উপহার দিতে পেরে আনন্দিত। এর আগে আমি নেতাদের কাছে দিতাম, নেতারা তাদের আপনজনকে বিলিয়ে দিয়েছে। আমার গরীব কর্মীরা বঞ্চিত হয়েছে। এখন থেকে আর এমন হওয়ার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, এইটা আর্থিক সহযোগিতা নাহ। এটা ঈদ উপহার। তিনি বলেন, এটা যাকাতের টাকা নাহ। যাকাতের জন্য আমার আলাদা ফান্ড আছে। গরীব অসহায় মানুষকে যাকাত ফান্ড থেকে সহায়তা করে থাকি। নেতাকর্মীদের জন্য আমার আলাদা ফান্ড রয়েছে। সেখান থেকেই নেতাকর্মীদের সামান্য ঈদ উপহার দিয়ে থাকি। আপনারা সকলে ভালো থাকবেন, ঈদের শুভেচ্ছা। জয় বাংলা-জয় বঙ্গবন্ধু ।
শান্ত/অননিউজ