প্রতিদিন সন্ধ্যা ছটায় কুমিল্লার লাকসাম রেলওয়ে জংশন স্টেশন থেকে নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় নোয়াখালী এক্সপ্রেস ট্রেন। অন্যান্য দিনের মতোই বুধবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যায় ট্রেনটি নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার জন্য স্টেশনে অপেক্ষা করছিল। গন্তব্যে পৌঁছার অপেক্ষায় ছিলেন যাত্রীরাও। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও ট্রেনটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকা গার্ড কিশোর কুমারকে পাওয়া যাচ্ছিল না। বিভিন্নভাবে যোগাযোগের চেষ্টার পর ব্যর্থ হয়ে অপর গার্ড আল আমিনকে দিয়ে ট্রেনটি লাকসাম ছেড়ে যায়। শুধুমাত্র গার্ডের অনুপস্থিতির কারণে ট্রেনটিকে দুই ঘণ্টা বিলম্বে যাত্রা শুরু করতে হয়েছে। গার্ডের কারণে দুই ঘন্টা বিলম্বের শিকার ট্রেনের যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়ে।
এদিকে, নোয়াখালী এক্সপ্রেসের বিলম্বের কারণে ঢাকা থেকে নোয়াখালীগামী আন্তঃনগর উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটিও বিলম্বে ছাড়তে বাধ্য হয়। উপকূল ট্রেনটি দুই মিনিট যাত্রাবিরতির কথা থাকলেও প্রায় আধঘণ্টা বিলম্বে ট্রেনটি লাকসাম জংশন স্টেশন থেকে নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এতে উভয় ট্রেনের প্রায় সাড়ে তিনশ যাত্রী ভোগান্তি পোহায়।
এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে রেলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান ট্রেনটির গার্ড কিশোর দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, লাকসাম জংশন স্টেশনের মাস্টার মাহবুবুর রহমান।
লাকসাম জংশন স্টেশন মাস্টার মাহবুবুর রহমান বলেন, বুধবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যায় নোয়াখালী এক্সপ্রেস ট্রেনটি প্রতিদিনের মতোই ছেড়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল। কিন্তু ট্রেনের গার্ড কিশোর দাস কোনও যোগাযোগ ছাড়া অনুপস্থিত থাকেন। কী কারণে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন তা আমাদের জানা নেই। আমি বিষয়টি আমাদের বিভাগীয় কর্মকর্তাদের অবগত করলে, রেলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা গার্ড কিশোর দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। গার্ড আল আমিনকে দিয়ে দুইঘণ্টা বিলম্বে ট্রেনটি নোয়াখালীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করে।
আরো জানা গেছে, ট্রেন পরিচালনায় পরবর্তী ইমারজেন্সি ডিউটি রুলসে বুক ছিলেন গার্ড শামসুল আলম। তিনিও ডিউটি পালনে অপারগতা প্রকাশ করেন। ওই সময় গার্ড শামসুল আলম পৈত্রিক বাড়ি নাথেরপেটুয়া গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। পরে আল-আমিন ট্রেনটির দায়িত্ব নেন।
নোয়াখালীগামী রেলযাত্রী আবদুল্লাহ, আশরাফ, অনিকসহ কয়েকজন জানান,
আজ নোয়াখালী এক্সপ্রেস লাকসাম জংশন দীর্ঘ ২ ঘন্টা সময় বসে ছিলো শুধুমাত্র কয়েকজন গার্ডের কারনে। ওরা চাকরি করে বাড়িতে বসে থেকে। এইদিকে যাত্রী গোল্লায় যাক তাদের কি? এ ট্রেনে যাতায়াতকারী মানুষগুলোর কি সময়ের মূল্য নেই?''
এ সময় ট্রেনের অন্যান্য যাত্রীরা দায়িত্বে অবহেলা করা গার্ডদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এদিকে, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া গার্ড কিশোর দাস বলেন, আমি ফেনী থেকে সুবর্ণ এক্সপ্রেসে আসতে ট্রেনটি প্রায় সোয়া একঘন্টা দেরি করে। এ জন্য আমারও দেরী হয়। আমি বিষয়টি সিনিয়র গার্ড ওমর ফারুককে জানিয়েছি। পরে অন্য গার্ড দিয়ে ট্রেনটি পরিচালনা করা হয়।
উল্লেখ্য, ইতিপূর্বেও গার্ডের অবহেলার কারণে সমতট এক্সপ্রেস ট্রেন এক ঘন্টা বিলম্বের ঘটনায় গার্ড কিশোর দাসকে বরখাস্ত করা হয়েছিল।