নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ইয়াবাসহ মাদক কারবারির জব্দকৃত একটি ব্যক্তিগত গাড়ি জেলা পুলিশের কার্যালয়ে সংবাদ সংম্মেলন শেষে সোনারগাঁ থানায় ফেরার পথে গাড়িটি কৌশলে খাদে ফেলে পালিয়ে গেছে আসামি। গ্রেপ্তার হওয়া আসামি (চালক) গাড়িটি চালিয়ে আসছিল। এতে সোনারগাঁ থানার দুই উপপরিদর্শক (এসআই) নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার মুনসুরাবাদ গ্রামের কাজী নুরুল ইসলামের ছেলে কাজী সালেহ আহম্মেদ ও গোপালগঞ্জের চরভাটপাড়া গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে এস এম শরীফুল ইসলাম। তাঁরা সোনারগাঁ থানায় কর্মরত ছিলেন। স্থানীয়রা উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন।
এ দুর্ঘটনায় রফিকুল ইসলাম নামে একজন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আহত হয়েছেন। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, সোমবার সকাল ১১টায় জেলা পুলিশের সহযোগিতায় কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ইয়াবার চালান নিয়ে আসা একটি ব্যক্তিগত গাড়ি সোনারগাঁর মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় আটকের পর তল্লাশি করে ৪২ হাজার ইয়াবাসহ ইয়াবা কারবারি চালক আলমগীর হোসেনকে গ্রেপ্তার এবং গাড়িটি জব্দ করা হয়।
আটকের পর নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে একটি প্রেস ব্রিফিং শেষে সোনারগাঁ থানায় কর্মরত উপপরিদর্শক (এসআই) কাজী সালেহ আহম্মেদ, শরিফুল ইসলাম ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রফিকুল ইসলাম সেই জব্দকৃত গাড়ি গ্রেপ্তার হওয়া চালক গাড়ি চালিয়ে থানায় ফিরছিল। সোনারগাঁ থানা থেকে ৭০০ মিটার দূরে দত্তপাড়া এলাকায় একটি পুকুরপাড়ে এলে তাঁদের বহনকারী গাড়ি থেকে চালক আলমগীর কৌশলে লাফিয়ে পড়ে গাড়িটি পুকুরে ফেলে পালিয়ে যায়।
এ সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাঁদের উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কাজী সালেহ আহম্মেদ ও শরিফুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিকে দিয়ে গাড়ি চালানো হচ্ছিল বলে পুলিশের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সোমবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আসামিকে এখনো ধরা যায়নি।
তিনি আরো জানান, আসামির কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ইয়াবা পানিতে পড়ে যাওয়ায় কিছু গলে গেছে। বাকিগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।
সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এস এম শফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, চালক আলমগীরকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তবে তাকে গ্রেপ্তারের জন্য বিশেষ অভিযান চলছে।