দেশজুড়ে বিখ্যাত কুমিল্লা দেবিদ্বারের গোমতী নদীর চরের শসা। প্রতি বছরই স্থানীয় বাজারের চাহিদা পূরন করে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বাজারগুলোতে পাঠানো হয়। বিগত বছরের তুলনায় এবছর ফলন ভালো পাওয়ায় চাষীদের মুখে স্বস্তির হাসি ফুটে ওঠেছে। তবে পরিচর্যা খরচসহ অন্যান্য খরচ বেড়ে যাওয়ায়, ন্যায্য দাম নিয়ে অসন্তোস প্রকাশ করেছেন অধিকাংশ চাষীরা।
উপজেলা সদর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরের গ্রাম বারেরারচর, খলিলপুর, বালিবাড়ির ও বালিবাড়ির চর, হামলাবাড়িসহ উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া গোমতী নদীর চরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে শীত মৌসুমে চাষ হয় এ সবজিটি।
শসাচাষী মোকবল হোসেন। মঙ্গলবার দুপুরে কথা হয়ে তার সাথে। গোমতীর চরের বারেরারচর অংশে পৈতৃকসূত্রে পাওয়া ও গিরবি রাখা ৯০ শতক জমিতে ১৫ বছর আগে থেকে শসা চাষ করে আসছেন তিনি। এবারও হেমন্তে শেষের দিকে তার এই জমিতে শসার চারা রোপন করেছেন। নিবিড় পর্যবেক্ষণে এবছর তার শসার ফলন ভালো হয়েছে। তার ৯০ শতক জমিতে শসাফলাতে করতে খরচ হয়েছে ১ লক্ষ ৮০ হাজার। চলতি মাসে প্রথম দিকে ১০০ মণ শসা বিক্রি করেছে। এর দাম পেয়েছেন ৮০ হাজার। সবকিছু ঠিক থাকলে আরো তিন চার বার বিক্রি করতে পারবেন।
শসাক্ষেতগুলো ঘুরে দেখা যায়, চারিদিকে সবুজের সমারোহ। গোমতীর পাড়ে বিস্তীর্ণ চরজুড়ে শুধুই সবুজে ঘেরা শসা ক্ষেত। শসা ছাড়াও এই চরে চাষ হয় নানান রকমের শাক-সবজি। কেউ ব্যস্ত পরিচর্যায়। কেউ ব্যস্ত উৎপাদিত ফলন স্থানীয় বাজার ও পাইকারদের কাছে নিয়ে বিক্রি করায়।
চাষী বাবুল সারকার ও আবু কলাম বেপারীসহ আরো তিনজন সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ চরে উৎপাদিত শসা স্থানী পাইকাররা তাদের থেকে কিনে ট্রাকযোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করেন। এই চরের শসার গুণগত মন ভালো ও খেতে সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এর বিপুলা চাহিদা রয়েছে। অন্যান্য বছরে তুলনায় পরিচর্যা খরচ একটু বেশি। এ বছর পাইকারদের কাছে কেজি প্রতি সাড়ে ২৭ টাকা দরে শসা বিক্রি করছেন চাষীরা।
তাদেরকে ছাড়াও কথা হয়েছে আরো কয়েকজন নবীন চাষীর সাথে। তারা জানায়, শসা চাষ লাভজনক। এই চরে জুলাই মাস থেকে আগস্ট পর্যন্ত শসা লাগানোর উপযুক্ত সময়। আড়াই মাসে শসা তোলা যায়। এ শসা তোলা চলবে পুরো ডিসেম্বর মাস ও জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহ ৬-৭ ট্রাক শসা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। আগামী মাসে এর দিগুণ বিক্রি হবে। গত বছর শসার উৎপাদন এতোটা ভালো হয়নি। অনেক চাষীকেই লোকসান গুণতে হয়েছিল। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ফলন অনেক ভালো হয়েছে।
দেবিদ্বার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বানিন রায় জানায় এবার পৌর এলাকায় ১০০ বিঘা জমিতে শসা চাষ হয়েছে। গোমতী নদীর চরের শাসার গুণগতমান অনেক ভালো। আমরা সবসময় কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকি।
এফআর/অননিউজ