প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে আকাশ থেকে ঝরে পড়া ঘন কুয়াশা, তীব্র শীত আর প্রতিকুল আবহাওয়ায় আলুর আবাদ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন রাজশাহীর বাগমারার কৃষকেরা। তার উপর আবার শুক্রবার ও শনিবার দুদিন হালকা বৃষ্টি হওয়ায় ক্ষেতের আলুগাছের সবুজ পাতায় পচন ধরার আশংকা দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় ছত্রাকনাশক কীটনাশক ছিঁটিয়ে ক্ষেতের কচি আলুগাছ রক্ষায় অপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা।
সরজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষি মাঠ এখন আলুর কচি সবুজ গাছে ভরে গেছে। কোনো কোনো এলাকায় আরো আগে থেকেই আগাম জাতের আলু বাজারে আসতে শুরু করেছে। আর কিছু দিন পরই পুরোদমে শুরু হবে আলু তোলার কাজ। অন্যান্য ফসলের তুলনায় বর্তমান আলুর বাজার দর ভালো থাকায় চাষিরা খুশি। কিন্তু হঠাৎ করে আকাশ থেকে ঝরতে থাকা ঘনকুয়াশা, হালকা বৃষ্টি এবং তীব্র শীত আর উত্তরের হিমেল হাওয়া অব্যাহত থাকায় আলুর আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এ উপজেলার কৃষকেরা। কারণ ঘনকুয়াশা আলুগাছের সবুজ পাতা ও ডগায় পচন ধরে। তার উপর আবার বৃষ্টির পানি পাতায় পড়লে সেই পচন রোগ দ্রæত পুরো ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রভাবে দ্রæত ক্ষেতের আবাদ উজাড় হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। রোববার উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মাঠে মাঠে কৃষকদের আলু ক্ষেতে কীটনাশক ছিঁটিয়ে আবাদ রক্ষার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। এ সময় হাটগাঙ্গোপাড়া এলাকার মিঠু ও শিকদারী এলাকার মাসুমসহ কয়েকজন কৃষক জানান, আলুর আশানুরুপ ফলন পেতে হলে জমিতে অন্তত ৮৫ থেকে ৯০ দিন পর্যন্ত আলুর গাছ টিকিয়ে রাখতে হবে। তা না হলে আলুর ভাল ফলন আশা করা যায় না।
বাগমারা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, এই উপজেলায় এবার ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে কার্ডিনাল ৩ হাজার ৬শ’ ২০ হেক্টোর, হোলান্ড ২ হাজার ৫ শ’ হেক্টোর, গোল আলু ২ হাজার ২শ’ হেক্টোর, লাল গোল আলু ২ হাজার ২শ’ হেক্টোর, ডায়মন্ড ২ হাজার ৪শ’ ১০ হেক্টোর, দেশী গোল আলু ২ হাজার ৪৫ হেক্টোর ও অন্যান্য জাতের আলু চাষ হয়েছে ১ হাজার ২৫ হেক্টোর জমিতে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রতিকুল আবহাওয়ার কবল থেকে ক্ষেতের কচি আলুগাছ রক্ষায় কৃষকদের বিনামূলে কীটনাশক দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা (বিএস) সরাসরি মাঠে গিয়ে কৃষকদের আলুগাছের পচন রোধের উপায় ও কৌশল বিষয়ে সার্বিক সহযোগীতা করে যাচ্ছেন।
এফআর/অননিউজ