চকোরিয়ার ১৮টি ইউপি নির্বাচন; পশ্চিম বড় ভেওলার নন্দিত চেয়ারম্যান বাবলা চৌধুরী

শান্তনু হাসান খান (বিশেষ প্রতিনিধি)

বাবা মরহুম খায়রুল ইসলাম চৌধুরী দাদা মরহুম আলহাজ্জ মুক্তার আহমেদ চৌধুরী এলাকার নন্দিত জনপ্রতিনিধি ছিলেন। পারিবারিক ঐতিহ্যকে অক্ষুন্ন রেখে তাদেরই বংশধর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (বাবলা চৌধুরী) চকোরিয়ার পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। তিনি আগামী নির্বাচনে পুনরায় নৌকার টিকেট নিয়ে আবার নির্বাচনের মাঠে থাকছেন। জনগণের প্রচন্ড চাপের মুখে এবার তিনি নির্বাচনের জন্য নৌকার প্রতীক নিয়ে লড়বেন। তবে এখন পর্যন্ত তার সাথে পাল­া দেয়ার মতো কারো নাম উঠে আসেনি।

চকোরিয়ার ১৮টি ইউনিয়নের মধ্যে পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নটি ছোট পরিসরের হলেও এর বর্তমান ভোটার সংখ্যা ১০/১১ হাজারের বেশী নয়। ২০১৬ তে নৌকার প্রতীক নিয়ে তিনি নির্বাচিত। এখানকার ৪নং ওয়ার্ডের ভোটার তিনি। বেড়ে উঠেছেন এ জনপদে। মাটি আর মানুষের সাথে সম্পৃক্ত সেই ছোট বেলা থেকেই। পড়াশোনা শুরু করেছেন ইলিয়াসিয়ার জমিলা বেগম হাই স্কুলে। এরপরে চকোরিয়া কলেজ থেকে আই কম পাশ করেন। পরবর্তী সময় বাঁশখালীর আলাউল ডিগ্রি কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন। ছাত্র জীবনে স্কুল থেকেই মিছিল-মিটিং সমাবেশের মধ্য দিয়েই তার ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু। স্কুল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের মধ্যদিয়ে তার রাজনীতির হাতেখড়ি। কলেজের পড়ার সময় মাতামুহুরী ডিঙ্গিয়ে যাতায়াত করতে সারাদিন কভার হয়ে যেত। সে সুবাদে ছাত্র রাজনীতিতে অতটা বেগবান ছিলেন না। পরবর্তী সময় ১৯৮৬ তে থানা যুবলীগের সভাপতি নির্বাচনের মধ্যদিয়ে জাতীয় রাজনীতি শুরু। ১৯৯১ তে কৃষকলীগের সভাপতির পাশাপাশি কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। মাতামুহুরী নামে রাজনৈতিক থানা থাকলে তিনি সে সময় ২০০৬ সালে আহবায়ক পরে সভাপতি নির্বাচিত হন।

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (বাবলা চৌধুরী) বলেন, আমার অতীতের পলিটিকেল ক্যারিয়ার ও এলাকার মানুষের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি সিলেকশান কমিটি তথা জননেত্রী শেখ হাসিনা ইনশাল্লাহ আমাকে দল থেকে পুনরায় নমিনেটেড করবেন বলে আমার দৃঢ়বিশ^াস। আর সেই বিশ^াস উপর ভর করে আমি নির্বাচনের মাঠকে গুছিয়ে রেখেছি। সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচনে প্রতিটি ভোটার তার ভোট প্রয়োগ করতে পারলে আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে পারবো।

এদিকে সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি ইতি মধ্যেই নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করেছেন। মার্চ থেকে শুরু করে জুন মাসের শেষ নাগাদ ধারাবাহিকভাবে গত বারের মত ৫ ধাপে নির্বাচন শেষ করতে চান স্থানীয় মাঠ প্রশাসন। দেশে বর্তমানে ৪ হাজার ৫৭১ টি ইউনিয়ন পরিষদ বিদ্যমান। এর মাঝে বরিশাল, ভোলা, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও লক্ষীপুরের ২০৬টি ইউনিয়ন এবং স্থগিত ১০৭টি ইউপি নির্বাচন সমাপ্ত করেছে সিইসি। নভেম্বরের ১৮ তারিখে দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচন হবে ৮৪৮টি। এর মাঝে দক্ষিণ চট্টগ্রামে ৬টি উপজেলার ১৯১টি ইউপি বিদ্যমান। এখানে ধারাবাহিকভাবে তৃতীয় ধাপে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কক্সবাজার জেলার চকোরিয়া, পেকুয়া, রামু, উখিয়া- এই ৪টি উপজেলা নির্বাচনের সম্ভাব্য তফসিল নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে। আর নির্বাচন গড়াবে ডিসেম্বরে। এর মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা একটু নড়েচরে বসবেন। আর অনেকেই নিরবে জনসংযোগ শুরুও করেছেন। ২০১৬ সালে ২২ শে মার্চ শুরু হয়ে ৪ জুন পর্যন্ত কয়েক ধাপে নির্বাচন সমাপ্ত করে সরকার।

স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন অনুসারে মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিন পূর্বে পরবর্তী পরিষদের গ্রহণযোগ্যতা থাকে। আর সে আলোকে কক্সবাজার জেলার চকোরিয়ার ১৮টি ইউনিয়নের নির্বাচনের জন্য চলতি দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য প্রার্থীরাও নিরবে কাজ করছেন। চকোরিয়া উপজেলায় একটি পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়ন বর্তমান। এর মাঝে পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়ন একটি আলোচিত জনপদ। এখানে বর্তমানে নির্বাচিত চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (বাবলা চৌধুরী) ৫ বছর জনগণের ম্যান্ডেড নিয়ে জনপ্রতিনিধিত্ব করছেন। তিনি পুনরায় দল থেকে নমিনেটেড হবেন বলে বিশ্বাস করেন। এলাকার জনগণেঝর প্রত্যাশাটাও তেমন। এ প্রসঙ্গে বাবলা চৌধুরী বলেন, বিগত দিনে জননেত্রী শেখ হাসিনার সকল উন্নয়ন কর্মসূচি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মধ্য দিয়ে পালন করেছি। নেত্রীর এবারের যে প্রতিপাদ্য- আমার গ্রাম আমার শহর এ কর্মসূচিকে বাস্তবায়নের জন্য অনেকগুলো কাজ করেছি। দু:স্থ ও অসহায় পরিবারকে প্রায় ২০০ পরিবারকে টিনের ঘর নির্মাণ করে দিয়ে তাদেরকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। সরকারের আশ্রায়ন প্রকল্পের পাশাপাশি আমি ব্যক্তিগত ভাবে কয়েকটি পরিবারকে মাথা গোজার ঠিকানা করে দিয়েছি। এ করোনাকালেও আমার সহায়তা অব্যাহত ছিল।

৫৬ বছরের সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (বাবলা চৌধুরী) সারা জীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করেছেন। তার নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আর জেলা ও উপজেলার আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ তার প্রিয় ব্যক্তিত্ব। সারা জীবন আওয়ামী ঘরোনার রাজনীতি করে আসছেন। দলের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে কোন রাজনীতি বাণিজ্য করেননি। চাঁদাবাজি, টেন্ডাররবাজি বা ভূমি দস্যুতার মতো কোন কাজ -তার প্রিভিয়াস রেকর্ডে নেই, আগামীতেও থাকবে না- এমন প্রত্যাশা জনগণের। তিনি বলেন মাদকের প্রভাব থেকে আমাদের যুব সমাজকে রক্ষার জন্য আগামীতে ওদেরকে মাঠে নিয়ে যাবো। এতে তাদের চিত্ত বিনোদন বাড়বে এবং এলাকার ক্রীড়াঙ্গন আরো সচল হবে। আর তখনই আমার ইউনিয়ন হয়ে উঠবে আলোকিত জনপদ।

আরো দেখুনঃ