সারা দেশে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি ইতি মধ্যেই নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করেছেন। মার্চ থেকে শুরু করে জুন মাসের শেষ নাগাদ ধারাবাহিক ভাবে গত বারের মত ৫ ধাপে নির্বাচন শেষ করতে চান স্থানীয় মাঠ প্রশাসন। দেশে বর্তমানে ৪ হাজার ৫৭১ টি ইউনিয়ন পরিষদ বিদ্যমান। এর মাঝে বরিশাল, ভোলা, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও লক্ষীপুরের ২০৬টি ইউনিয়ন এবং স্থগিত ১০৭টি ইউপি নির্বাচন সমাপ্ত করেছে সিইসি।
নভেম্বরের ১৮ তারিখে দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচন হবে ৮৪৮টি। এর মাঝে দক্ষিণ চট্টগ্রামে ৬টি উপজেলার ১৯১টি ইউপি বিদ্যমান। এখানে ধারাবাহিকভাবে তৃতীয় ধাপে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি কক্সবাজার জেলার চকোরিয়া, পেকুয়া, রামু, উখিয়া- এই ৪টি উপজেলা নির্বাচনের সম্ভাব্য তফসিল নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে। আর নির্বাচন গড়াবে ডিসেম্বরে। এর মধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা একটু নড়েচরে বসবেন। আর অনেকেই নিরবে জনসংযোগ শুরুও করেছেন। ২০১৬ সালে ২২ শে মার্চ শুরু হয়ে ৪ জুন পর্যন্ত কয়েক ধাপে নির্বাচন সমাপ্ত করে সরকার। স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন অনুসারে মেয়াদ শেষ হওয়ার ১৮০ দিন পূর্বে পরবর্তী পরিষদের গ্রহণযোগ্যতা থাকে। আর সে আলোকে কক্সবাজার জেলার চকোরিয়ার ১৮টি ইউনিয়নের নির্বাচনের জন্য চলতি দায়িত্বে থাকা চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য প্রার্থীরাও নিরবে কাজ করছেন। একটি পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়ন বর্তমান। এর মাঝে সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন একটি আলোচিত জনপদ।
সংক্ষেপে এর নাম এস এম পুর ইউনিয়ন। এখানে বর্তমানে নির্বাচিত চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম একটানা দীর্ঘ ১৯ বছর জনগণের ম্যান্ডেড নিয়ে জনপ্রতিনিধিত্ব করছেন। এর আগে তার বড়ভাই নুরুল হক চেয়ারম্যান ৫ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। তারও আগে তার বাবা মরহুম মোজাফফর আহমেদ মেম্বার দীর্ঘ ২৫ বছর পরিষেদের মেম্বার ছিলেন স্বচ্ছতার মধ্যে। সেই ধারাবাহিকতায় বর্তমান চেয়ারম্যান আজিম এলাকায় বেশ নন্দিত। তিনি পুনরায় দলথেকে নমিনেটেড হতে চান। তারও বিশ্বাস এবারও তিনি দল থেকে মনোনীত হবেন। তার পাশাপাশি আরও থাকছেন গতবারের বিদ্রোহী প্রার্থী রুস্তম শাহরিয়ার। তিনিও এবার মাঠে থাকবেন। এছাড়াও নাছির উদ্দিন ও সাইফুল কবির চৌধুরীর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে তাদের নিয়ে এলাকায় জনগণের বেশ প্রশ্নবিদ্ধ। এ প্রসঙ্গে আজিম বলেন, আমার অতীতের পলিটিকেল ক্যারিয়ার ও এলাকার মানুষের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টি সিলেকশান কমিটি তথা জননেত্রী শেখ হাসিনা ইনশাল্লাহ আমাকে দল থেকে পুনরায় নমিনেটেড করবেন বলে আমার দৃঢ়বিশ্বাস। আর সেই বিশ্বাস উপর ভর করে আমি নির্বাচনের মাঠকে গুছিয়ে রেখেছি। সুষ্ঠু এবং অবাধ নির্বাচনে প্রতিটি ভোটার তার ভোট প্রয়োগ করতে পারলে আমি পুনরায় উঠে আসবো।
আজিমুল হক আজিম এস এম পুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ভোটার। বেড়ে উঠেছেন এ জনপদে। পড়াশুনা স্থানীয় স্কুলে। ছাত্র অবস্থায় ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের রাজনীতির পর ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য আওয়ামীলীগের রাজনীতির মধ্যদিয়ে তিনি জাতীয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে যান। এ সময় তিনি উপজেলা আওয়ামীলীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদন ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদন নির্বাচিত হয়েছিলেন। তার মামা খালু মুক্তিযোদ্ধা। তার বাবাও একসময় আওয়ামী ঘরনার রাজনীতি করতেন। তিনি বলেন, নির্বাচিত হলে ইনশালাহ এস এম পুর ইউনিয়নের সমস্যা চিহ্নিত করে সবাইকে সমন্বয় করে একে ঢেলে সাজাবো। পাশাপাশি জননেত্রী শেখ হাসিনা এবারের প্রতিপাদ্য- ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ কে বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করবো। তিনি বলেন মাদকের প্রভাব থেকে আমাদের যুব সমাজকে রক্ষার জন্য আগামীতে ওদেরকে মাঠে নিয়ে যাবো। এতে তাদের চিত্ত বিনোদন বাড়বে এবং এলাকার ক্রীড়াঙ্গন আরো সচল হবে। আর তখনই আমার এস এম পুর ইউনিয়ন হয়ে উঠবে আলোকিত জনপদ। এর পাশাপাশি আমার এলাকায় ১০০ একর ভূমির উপরে নান্দনিক নিভৃত নৈসর্গিক পরিবেশের মধ্যদিয়ে একটি অত্যাধুনিক পর্যটন এলাকা ইতিমধ্যে আমি বাস্তবায়নের পথে হেটে যাচ্ছি। এখানে অনেকের কর্মস্থান ঘটবে। আর পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য আমার পরিষদ থেকে আরো বাস্তবমুখী প্রদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
বর্তমান চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম বিগত দিনে যত কাজ করেছেন তার সবটাই ছিলো সরকারী রুটিন ওয়ার্ক এবং তা স্বচ্ছতার মধ্যে সমাপ্ত করেছেন। কোন অনিয়ম করা হয়নি। ৫২ বছরের আজিমুল হক আজিম বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত উপজেলা কমিউনিটি পুলিশিং এ সভাপতি ছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দাতা সদস্য এবং পৃষ্ঠপোষক। এছাড়াও বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।