চট্টগ্রামে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। দুজনের মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে একজন চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী এবং অপরজন পথচারী বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন। তিনি বলেন, দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত আরও ৯ জন আসছে।
জানা গেছে, বিকেল ৩টা থেকে নগরের মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট এবং ষোলশহর আশেপাশের এলাকায় কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এর আগে দুপুর থেকে বিভিন্ন মোড়ে অবস্থা নেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা। দুই নম্বর গেটের এলাকায় একটি বাস ভাঙচুর করে তারা।
সবশেষ পাওয়া তথ্য মতে, ষোলশহর শিক্ষা বোর্ড এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী ও ছাত্রলীগের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছে। মুরাদপুর অংশে অবস্থান নিয়েছে কোটা আন্দোলনকারীরা। দুই নম্বর ও ষোলশহর এলাকায় অবস্থান নেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে। কোটা আন্দোলনকারীরাও লাঠিসোটা নিয়ে অবস্থান করতে দেখা যায়।
এর আগে মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে রংপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাইদ নিহত হন।
নিহত আবু সাইদ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুরের বাসিন্দা মকবুল হোসেনের ছেলে।
শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেরোবির ইংরেজি বিভাগের প্রধান আসিফ আল মতিন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ দুপুর ২টায় রংপুর খামার মোড় থেকে শিক্ষার্থীরা বিশাল মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১নং ফটকের সামনে আসেন। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করলে পুলিশ বাধা দেয়। এতে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় পুলিশ প্রায় ২০০ রাউন্ড গুলি ও রাবার বুলেট ছোড়ে। পুলিশের গুলিতে আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু সাইদ নিহত হন।
উল্লেখ্য, রোববার (১৪ জুলাই) চীন সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন ‘মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিপুতিরা কিছুই পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতিপুতিরা সব পাবে?’। প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা বা নাতিপুতি’ বলা হয়েছে অভিযোগ করে রোববার রাত থেকে প্রতিবাদ শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে রাজধানীজুড়ে।
সূত্রঃ বিডি24লাইভ
একে/অননিউজ24