চাঁদাবাজির টাকা ভাগাভাগির দ্বন্ধে শরীফকে হত্যা করে বন্ধুরা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি।।

ময়মনসিংহ নগরীর চরপাড়া এলাকায় ছুরিকাঘাতে শরীফ চৌধুরী ওরফে শান্ত (২১) খুনের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ। নগরীর চরপাড়া এলাকার ফুটপাতে অস্থায়ী দোকান থেকে সাপ্তাহিক চাঁদার টাকা ভাগাভাগি দ্ব›েদ্ধ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন পিবিআই পুলিশ।

শনিবার (৯ এপ্রিল) দুপুরে জেলা পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পিবিআই পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস এসব তথ্য জানান।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, নগরীর সানকিপাড়া এলাকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মো. শান্ত ইসলাম (২০), সদর উপজেলার পরানগগঞ্জ ভাটিপাড়া এলাকার মো. কেরামত আলীর ছেলে মোঃ আরিফুজ্জামান আরিফ (২২), জেলার তারাকান্দা উপজেলার নুর মোহাম্মদের ছেলে মো. রাকিবুল হাসান তপু (২৫)। বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) রাতে নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লা এলাকার ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

পিবিআই পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস আরো বলেন, নিহত শরীফ চৌধুরী শান্ত এবং হত্যাকান্ডে জড়িতরা সবাই একে অপরের বন্ধু ছিলেন। তারা নগরীর চরপাড়া এলাকায় একসাথে ওই এলাকার ফুটপথে অস্থায়ী দোকান থেকে সাপ্তাহিক চাঁদা তুলতেন।

স¤প্রতি নিহত শরীফ আলাদা গ্রুপ করে চাঁদার টাকা তুলা শুরু করেন। পরে গ্রেফতারকৃতরা তাকে অনেক বুঝিয়ে শরীফকে তাদের গ্রুপে আসতে বলে এবং চাঁদার টাকা ভাগাভাগি করে নিতে বলেন। এতে শরীফ অস্বীকৃতি জানায়। এই ক্ষোভ থেকে গ্রেফতারকৃত তিনজনসহ মোট ৫ জন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পলা বুধবার রাতে ১২ টার দিকে মন্ডল প্লাজা, চরপাড়া চৌধুরী ক্লিনিকের গলিতে ওৎপেতে বসে থাকেন। এসময় শরীফ আসতেই তাকে উপর্যুপরি ১৮ বার বুকে পিঠে ছুরিকাত করে ফেলে রেখে যায়। পরে স্থানীয়রা শরীফকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেছে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গ্রেফতারকৃত আসামীরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনায় সরাসরি সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। পরে আসামী আরিফুজ্জামান আরিফের দেখানো মতে পরানগঞ্জ ভাটিপাড়া তার নিজ বাড়ির পিছন থেকে খড়ের পুঞ্জির ভিতর হতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দু’টি চাকু আলামত হিসেবে উদ্ধার করা হয়। বাকি আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।

এদিকে, নিহতের বাবা শহিদ চৌধুরী বলেন, আমার ছেলে ও গ্রেফতারকৃত তিনজনই যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। তবে, তাদের দলীয় কোন পদ ছিল না। অল্প কিছুদিনের মাঝেই আমার ছেলে যুবলীগের পদ পাওয়ার কথা ছিল। ওই পদ নিয়ে দ্ব›েদ্ধই আমার ছেলে খুন হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

শরীফ চৌধুরী ওরফে শান্ত হত্যার ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) রাতে নিহতের বাবা শহিদ মিয়া বাদী হয়ে কোতোয়ালী মডেল থানা মামলা দায়ের করেন। নিহত শরীফ জেলার গৌরীপুর উপজেলার টাঙ্গুয়া এলাকার শহিদ মিয়ার ছেলে। তবে বাবার ক্লিনিক ব্যবসার সুবাধে নগরীর চরপাড়া এলাকাতেই পরিবারের সঙ্গে থাকতেন শরীফ।

আরো দেখুনঃ