কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিং ছুপুয়া গ্রামের অসহায় জোসনা বেগমের বাড়ী-ঘরে হামলা-ভাঙচুর মারধর ও ব্যাপক ক্ষতিসাধনের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার দুপুরে জুম্মার নামাজের পর এঘটনা ঘটে।
উক্ত ঘটনায় ভুক্তভোগী জোসনা বেগম বাদী হয়ে বিবাদী মোঃ সহিদ (৪৩), মোঃ জাফর (৪৬), মোঃ রাফি (১৯), তানু মিয়া (৫৫), সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপরোক্ত বিবাদীগন তার একই গ্রামের পাশাপাশি বাড়ীর লোক। বিগত প্রায় ২ বছর পূর্বে তার বশত বাড়ীর উত্তর পাশে অর্থাৎ কিং ছুপুয়া মসজিদের পাশে তার স্বামী সুমন মিয়া ১১ শতক জায়গা ক্রয় করলেও উক্ত জায়গার মধ্যে বিবাদীদের মলমূত্র সহ যাবতীয় ময়লা-আবর্জনা ফেলায় সেই জায়গায় কোনও কিছু করতে পারেনা বিধায় ভীষন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিবাদীদের বারবার অনুরোধ করিলেও তাহারা কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় মলমুত্র অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে সম্পূর্ন খরচ তার স্বামী নিজে বহন করবে বলার পরও বিবাদীগন পেশীশক্তি প্রদর্শন করিয়া সকল ধরনের ময়লা আবর্জনা তার স্বামীর জায়গায় ফেলতে থাকলে নিরুপায় হয়ে বাদীনির স্বামী ময়লা আবর্জনা যাওয়ার পথ বন্ধ করে দিলে উক্ত বিবাদীগন ও তাদের সহযোগি অজ্ঞাতনামা আরো ৮/১০ জন বিবাদী গত বৃহস্পতিবার রাত অনুমান ১০ ঘটিকার সময় হাতে লাঠি, লোহার রড, ধারালো দা-ছেনি নিয়ে বে-আইনি জনতায় দলবদ্ধ হইয়া অন্যায়-অনধিকারভাবে তার বশত ঘরের উঠানের মধ্যে আসিয়া সুমন মিয়াকে এলোপাথারী কিল, ঘুসি ও লাথি মুড়া মারিয়া শরীরের বিভিন্নস্থানে মারাত্বক বেদনা দায়ক জখম করে। জোসনা বেগম ও তার স্কুল পড়ুয়া মেয়ে সুবর্ণা আক্তার (১৩) আসিয়া সুমন মিয়াকে বিবাদীদের কবল থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা করিলে বিবাদীরা বাদীনি ও তার মেয়ের চুলের মুঠি ধরে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আগাত করে। জোসনা বেগম চিৎকার করিলে বিবাদী সহিদ তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চিপে ধরে এবং বিবাদী মোঃ জাফর জোসনা বেগমের পরিধেয় কাপড় টানিয়া ছিড়িয়া শ্লীলতাহানী করার চেষ্টা করে।
বিষয়টি স্থানীয় গন্যমান্য লোকজনকে অবহিত করিলে সকল বিবাদীগন ক্ষিপ্ত হইয়া পূনরায় শুক্রবার জুম্মার দুপুরে দেশীয় তৈরী অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে বাদীনির বাড়ীতে প্রবেশ করিয়া ঘরের দরজা, জানালা, টিনের সীমানা বেড়া সহ ঘরে থাকা জিনিষপত্র কোপাইয়া, পিটাইয়া, ভাংচুর ও লুটপাট করিয়া ৩,৫০,০০০/-টাকার ক্ষতি সাধন, ঘরের মধ্যে গরু বিক্রয় বাবদ রাখা নগদ ২,০০,০০০/-টাকা ও ০৮ আনা ওজনের ১ জোড়া স্বর্নের কানের দুল, যাহার মুল্য ৭০,০০০/-টাকা বিবাদী মোঃ রাফি নিয়ে যায়।
উল্লেখ্য যে, বাদীনির স্বামী সুমন মিয়া গত শুক্রবার সকালে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসলে উপরোক্ত বিবাদীগন তাকে মারধর করে থানা পুলিশের নিকট সোপর্দ করে এবং পরবর্তীতে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ শনিবার সকালে সুমন মিয়াকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
এঘটনায় জোসনা বেগম সাংবাদিকদের জানান, তুচ্ছ একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাকে ও আমার স্বামী, শাশুড়ি ও আমার স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে তারা অনেক মারধর করে এবং আমার বাড়ি ঘর ভাংচুর করে ঘরে থাকা নগদ টাকা পয়সা লুটপাট করে নিয়ে যায়। আমি প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার চাই।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিলাল উদ্দিন বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।