কুমিল্লা প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের শুভপুরে প্রবাসীকে হত্যা চেষ্টা, মারধর ও সম্পত্তি আত্নসাৎ এর অভিযোগে প্রবাসীর স্ত্রী ও কথিত পরকিয়া প্রেমিককে গ্রেপ্তার করেছে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ। প্রেপ্তারকৃত ঝর্ণা বেগম (৪৩), শুভপুর ইউনিয়নের পাশাকোট এলাকার প্রবাসী মনিরুজ্জামান মজুমদারের স্ত্রী ও কথিত পরকিয়া প্রেমিক মোঃ ইয়াছিন (৪০), মৃত রফিক মিয়ার ছেলে। গতকাল শনিবার পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।
থানায় দায়ের করা মামলার সুত্র ও ভুক্তভোগি প্রবাসী মনিরুজ্জামান মজুমদার জানান, তিনি দীর্ঘ ২৮ বছর সৌদি আরব প্রবাসী ছিলেন। প্রবাসে থাকা অবস্থায় স্ত্রী সন্তানদের বরন পোষনসহ যাবতীয় আবদার পূরন করেছেন। উপার্জনের সকল অর্থ স্ত্রীর নিকট গচ্ছিত রাখেন। স্বামী প্রবাসে থাকার সুযোগে তার স্ত্রী স্থানীয় একটি এতিমখানার শিক্ষক ইয়াছিনকে সন্তানদের লেখাপড়ার কথা বলে বাসায় এনে রাখেন এবং তার যাবতীয় খরচ বহন করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ইয়াছিনের সাথে প্রবাসী মনিরুজ্জামানের স্ত্রী ঝর্ণা বেগম পরকিয়া প্রেমে জড়িয়ে যান। ফলে তারা প্রবাসীর অবর্তমানে স্বামী স্ত্রীর মত বসবাস করতে থাকেন। বিষয়টি প্রবাসী মনিরুজ্জামান জানতে পেরে দেশে চলে আসেন। দেশে এসে তাদের অনৈতিক কাজ থেকে ফেরাতে বহুবার চেষ্টা করেও ফেরাতে পারেননি। তিনি জানতে পারেন তার নাবালক সন্তানের নামে দেওয়া দেড় কোটি টাকার সম্পদ কথিত পরকিয়া প্রেমিকের সহায়তায় প্রবাসী মনিরুজ্জামানকে মৃত বানিয়ে জালিয়াতি করে গার্ডিয়ানশীপের মাধ্যমে বিক্রি করে দেয় ঝর্ণা বেগম। এছাড়া প্রবাসীর দীর্ঘ দিনের জমানো গচ্ছিত সকল টাকা ঝর্ণা বেগম ও তার পরকিয়া প্রেমিক ইয়াছিন আত্নসাৎ করে এবং তার সন্তানেদের অর্থের লোভ দেখিয়ে এর প্রতিবাদ করা থেকে বিরত রাখেন। এক পযায়ে তারা প্রবাসীকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়।
এ বিষয়টি নিয়ে প্রবাসী মনিরুজ্জামান একাধিকবার স্থানীয় সর্দার মাতব্বর ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের নিয়ে বিচার শালিস করে সুরাহ করার চেষ্ঠা করে ব্যর্থ হন। পরে বাধ্য হয়ে প্রবাসী মনিরুজ্জামান পাশাকোট এলাকায় একটি বাসা ভাড়া করে বসবাস করতে থাকেন।
প্রবাসী মনিরুজ্জামান জানান, সারা বছর পরিশ্রম করে অসুস্থ হয়ে দেশে আসি। আমাকে বাসায় যেতে দেয়না। মাঝে মধ্যে আমি আমার বাড়িতে গেলে আমাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। গত ১ জুলাই আমি বাড়িতে গেলে ঝর্ণা বেগম ও তার পরকিয়া প্রেমিক ইয়াছিনসহ অন্যরা আমাকে কুপিয়ে আহত করে। এসময় তারা আমাকে ব্যাপক মারধর করে উড়না দিয়ে পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। আমার চিৎকারে প্রতিবেশিরা আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করায়। এ ঘটনায় আমি ঝর্ণা বেগম ও তার পরকিয়া প্রেমিক ইয়াছিন, তামান্না আক্তার ও তন্নিকা আক্তারের নামে মামলা করি। চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা নং-০২ তারিখ ২ জুলাই ২০২৩ইং। এ মামলায় ঝর্ণা বেগম ও ইয়াছিন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, প্রবাসী মনিরুজ্জামনের দায়ের করা মামলায় ঝর্ণা বেগম ও ইয়াছিন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেনেছি ঝর্ণা বেগম ও তার পরকিয়া প্রেমিক ইয়াছিন ওই প্রবাসীকে মারধর করেছে। প্রবাসী মনিরুজ্জামান প্যারালাইজড এর রোগী। তার সম্পত্তি থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
এফআর/অননিউজ