জয়পুরহাট সদর উপজেলার ভূটিয়াপাড়া এলাকার চক উজাল গ্রামে রাস্তা কেটে সরু করায় মুক্তিযোদ্ধাসহ অর্ধ শতাধিক পরিবারের সাধারন মানুষ চরম ভোগান্তিতে পরেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাস্তাটির পার্শবর্তী জোতদাররা ওই রাস্তাটি কেটে সরু করেছেন বলে ভূক্তভোগীদের অভিযোগ।
জানা গেছে, সদর উপজেলার প্রত্যন্ত চক উজাল গ্রামের সাধারন মানুষসহ রিকসা-ভ্যান, গরুর গাড়ী ইত্যাদি যানবাহনের যাতায়াতের জন্য ৬/৭ ফুট চওড়া একটি মেঠোপথ ছিল সূদীর্ঘ ৬০/৭০ বছরেরও আগে থেকে।
ওই রাস্তাটির দু’পাশে একই গ্রামের অভিযুক্ত খাযইরুজ্জামান ও আবু সুফিয়ান হেলালের জমি থাকায় তারা গত প্রায় দু’ মাস আগে রাস্তাটির এক পাশে পুকুর খনন করেন। আর অন্য পাশে মাটি কেটে রাস্তটি দেড় থেকে ২ ফুট সরু করেন। এতে ওই সরু রাস্তা দিয়ে রিক্সা ভ্যান তো দূরের কথা সাইকেল চালিয়ে যেতে পারছেন পথচারীরা। এ ব্যপারে জেলা প্রশাসক, উপজেলা, নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ, ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কাছে প্রতিকার চেয়েও আবেদন করেও কোন লাভ হয়নি।
ওই গ্রামটিতে মোট ৪ জন মুক্তিযোদ্ধার জন্য বীর নিবাস ছাড়াও সেখানে একটি ঈদগাহ মাঠ, কবরস্থান ও পীরের মাজার রয়েছে, যেখানে বছরের বিভিন্ন সময় ওরস, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এসব ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ভক্ত-মুসল্লীরা অংশ গ্রহন করে থাকেন।
এমন মন্তব্য করে একই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মেখলেছার রহমান ও প্রতিবেশী ভূটিয়াপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা ওসমান গনি অভিযোগ করেন, এই গ্রামে চার জন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের প্রায় ২০/৩০ জন সদস্য ছাড়াও আশপাশের সাধারন মানুষ রয়েছে।
জয়পুরহাট সরকারী কলেজে তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আমিনুল ইসলাম ও পার্শ্ববর্তী ভূটিয়াপাড়া উচ্চবিদ্যায়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী সোহানা আক্তার মিম্মা জানায়, এই গ্রাম থেকে প্রতি দিন কষ্ট করে যতায়াত করতে হয় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের।
চক উজাল গ্রামের মেহেদি হাসান পান্না, আবুজার রহমানসহ গ্রামবাসীরা অভিযোগে বলেন, এই এলাকার প্রসুতীসহ জরুরী রোগাক্রান্তদের জরুরী চিকিৎসা দিতে ওই সরু পথ দিয়ে যাওয়া কোন ভাবেই সম্ভব নয়। এ ছাড়া অভিযুক্তরা যে একই রাস্তার অপর পাশে একটি পুকুর খনন করেছেন, সেখানে বৈদ্যুতিক খুঁটি পুকুরটির পানির প্রায় কাছাকাছি রয়েছে। এতে সাধারন মানুষের দূর্ঘটনার আশঙ্কা করছি।
এ নিয়ে অভিযুক্তদের পক্ষে আবু সুফিয়ান বলেন, ‘নিজের জমির উপর দিয়ে রাস্তা না দিলে জোর করে কেউ নিতে পারবে না।’ এ কথা বলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান তিনি।
সরকারিভাবে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে পুনরায় এই রাস্তাটির পূন:সংস্কার করে গ্রামবাসীদের যাতায়াতের সমাধান করার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রাশেদুল ইসলাম জানান,‘ এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে প্রেরীত অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছি। এ ছাড়া আমার কাছেও সরাসরি পাঠানো একটি আবেদন পেয়েছি। ভুক্তভোগীদের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলার পরামর্শ দিয়েছি।’
একে/অননিউজ২৪