সোনারগাঁ প্রতিনিধি।।
সোনারগাঁ উপজেলা থেকে পাঠানো আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট তালিকায় প্রস্তাবিত কমিটির নাম বাদ দিয়ে জাতীয় পার্টি, বিএনপি-জামায়াতের লোক নিয়ে পকেট ভারী কমিটি তৈরি করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি ।
নিজেদের মনগড়া ব্যক্তিদের নাম অন্তর্ভূক্ত করে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করায় আওয়ামী লীগের ইতিহাসে” নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ বিতর্কিত এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে বলে মন্তব্য করেন সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার।
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগকে সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করতেই এই কমিটিকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। (শনিবার ৮ জুলাই) মোবাইলে পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে জানান, সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ফেসবুকের মাধ্যমে দেখতে পাই জেলা কমিটি প্রস্তাবিত কমিটির তালিকা প্রকাশ করেছেন। এই পকেট কমিটির পেটে সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর নেই। আমাদের কারো হাতে এখনো চিঠি পৌঁছে নি।
কায়সার হাসনাত আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর কন্যা, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় গত (৩ সেপ্টেম্বর ২০২২) সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি,ও কেন্দ্রীয় আ’লীগের নেতৃবৃন্দ উক্ত সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা এড. সামসুল ইসলাম ভূইয়াকে সভাপতি, ইঞ্জিঃ মাসুদুর রহমান মাসুমকে সহ-সভাপতি এবং সাবেক সংসদ সদস্য কায়সার হাসনাতকে সাধারণ সম্পাদক করে যে দায়িত্ব দিয়েছে। সে দায়িত্ব থেকে আমরা উপজেলার ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাছাই করে ৭১ বিশিষ্ট সদস্যের নামের একটি তালিকা জেলা আওয়ামী লীগের কাছে পাঠাই। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগ রীতিমতো আমাদের হতাশ করেছে। তারা তাদের সম্মান নিজেরাই নষ্ট করেছে বলে আমরা ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।
সাবেক সংসদ সদস্য কায়সার বলেন, পুরো বাংলাদেশেই আওয়ামী লীগের উপজেলা পর্যায় কমিটি হয়েছে এখনো হচ্ছে। সম্প্রতি নারায়ণঞ্জের অন্যান্য উপজেলাগুলোতেও কমিটি হয়েছে। সেখানে উপজেলা কমিটি যে তালিকা দিয়েছে, জেলা কমিটি সে তালিকা অনুযায়ী কমিটির অনুমোদন দিয়েছে, আর এটাই হওয়া উচিত। যদি কোন সংশোধন, সংযোজ বা বিয়োজন করার হয় তা উপজেলা কমিটির সাথে বসে কথা বলে করতে পারেন। কিন্তু সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে যা হয়েছে, তা বাংলাদেশে নজিরবিহীন।
উপজেলা আ’লীগের সহসভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম বলেন, জেলা কমিটি আমাদের অভিভাবক। তাদের রদবদল করার অধিকার অবশ্যই আছে কিন্তু উপজেলা কমিটিকে কোন কিছু না জানিয়ে, কোন রকম পরামর্শ না করে, উপজেলা থেকে যে প্রস্তাবিত কমিটির তালিকা পাঠানো হয়েছে সেখান থেকে ১৮/১৯ জনকে বাদ দিয়ে তাদের নিজেদের ইচ্ছায় নিজেদের মতো অরাজনৈতিক অসাংগঠনিক ব্যক্তিদের নাম অন্তর্ভূক্ত করার নজির বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাসে আছে বলে আমার জানা নেই। তারা যা করেছে পুরোপুরি রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত করেছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এড শামসুল ইসলাম ভূইয়া বলেন, অর্থের লেনদেন হয়েছে কি-না তা আমি জানিনা। আর হলেও যেহেতু আমার সামনে হয়নি, আমি সেই কথা আমি বলতে পারবনা। তবে, ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতেই যে এই কমিটি করা হয়েছে সেটা আমি নিশ্চিতভাবেই বলতে পারি।
আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সোনারগাঁ আওয়ামী লীগকে সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করতে এই কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নয়তো যাদের নাম এখানে অন্তুর্ভূক্ত করা হয়েছে, তাদের একজনকেও উপজেলা আওয়ামী লীগের কোন কর্মকান্ডে কখনো কেউ দেখেছে বলে আমার জানা নেই বা তারা আওয়ামী লীগের কোন সংগঠনের সাথে জড়িত আছেস কি-না আমি জানিনা। এই কমিটিকে আমি প্রত্যাখান করেছি।
এফআর/অননিউজ