জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ঝিনাইদহ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সুচন্দন মন্ডলের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, হয়রানি, দুর্ব্যবহার এবং আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে যখন তখন যাকে তাকে জরিমানা করে টাকা আদায়ের অভিযোগ করা হয়েছে। এমনকি পুলিশের ভয় দেখিয়ে দোকান,ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেয়ার ঘটনাও ঘটিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
একই কর্মস্থলে বিগত ছয় বছর চাকরী করা, জেলার শৈলকুপা উপজেলায় শশুর বাড়ি হওয়া এমনকি কোন এক অদৃশ্য শক্তির সাথে সম্পৃক্ত থাকার সুবাদে একেবারে বে-পরোয়া হয়ে উঠেছেন প্রজাতন্ত্রের এই কর্মচারী। ঝিনাইদহ শহরের অগ্নীবীণা সড়কের প্রতিষ্ঠিতি বীজ ব্যবসায়ী শহীদ বীজ ভান্ডারের স্বত্তাধীকারী শহীদুল ইসলাম গতকাল সকালে তাঁর নিজ বাসভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন। তিনি বলেন সুচন্দন মন্ডল প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মচারী হয়ে আমার মান-সম্মান,ব্যবসায়ীক সুনাম ধ্বংস করে দিয়েছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে এখন আমি বাইরে বেরুতে পারিনা এমনকি জীবন বাঁচাতে ঔষধের দোকানে গেলেও আমার মেয়েদের প্রতি আঙ্গুল তুলে বলা হয় তুমি শহীদ বীজ ভান্ডারের মেয়ে না? তোমার বাবাকে তো সুচন্দন মন্ডল আড়াই লাখ টাকা জরিমানা করেছে। আমি এখন কোথায় যাবো, কার কাছে বিচার চাইবো?
তিনি বলেন, তার ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হয়ে আজ আমি পুঁজি হারা,সম্মান হারা। তিনি বলেন,সুচন্দন মন্ডল জেলা তথ্য অফিসার আবুবকর সিদ্দিকের সহযোগিতায় তার মামা ধানচাষী আজিজার মন্ডলকে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে আমার বিরুদ্ধে একটি সাজানো মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগের শুনানীতে আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেয়ার ভয় দেখিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেয় এবং আমার কাছ থেকে দুই লক্ষ ২৯ হাজার ৫শত টাকা আদায় করে নেয়। এমনকি আমার আইন জীবীদেরকেউ অপমান করে। তিনি বলেন যে অভিযোগ আমাকে জরিমানা করা হয়েছে সেই অভিযোগকারী কৃষক এবং মাঠ সরেজমিন পরিদর্শন করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। তিনি বলেন সুচন্দন মন্ডল সরকারী কর্মচারী হওয়ায় সরকারী দপ্তরের যেখানেই গেছি তারা কেউ আমার অভিযোগ আমলে নেয়নি। তার বাস্তব উদাহরণ হরিণাকুন্ডু উপজেলা কৃষি অফিসার হাফিজ হাসান আমার আবেদনের প্রেক্ষিতে সঠিক প্রতিবেন দেয়ার দুই ঘন্টার মধ্যে সুচন্দন মন্ডলের হুমকিতে সেই রিপোর্ট পরিবর্তন করে ফেলেন।
এ বিষয়ে জেলা তথ্য অফিসার আবু বকরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অভিযোগ কারী কৃষক এবং অভিযুক্ত শহীদ বীজ ভান্ডার নিজেদের মধ্যে একটি আপোষ মিমাংশার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ পরিশোধ করেছে তাকে জরিমানা করা হয়নি। সুচন্দন মন্ডলের কাছে বার বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এছাড়া কৃষি অফিসার হাফিজ হাসানের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুচন্দন মন্ডলের রোশের শিকার হাসান বীজ ভান্ডারের মালিক হাসান আহম্মেদ, মদীনা বীজ কেন্দ্রের স্বত্তাধীকারী আবু তাহের এবং ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আইন জীবী এ্যাড. শামসুজ্জামান লাকী। এছাড়া সুচন্দন মন্ডলের শুনানীতে উপস্থিত ছিলেন এ্যাড. টিপু সুলতান,এ্যাড.আব্দুল খালেক সাগর, এবং এ্যাড. আমিনুল ইসলাম।
আহসানুজ্জামান সোহেল/অননিউজ24।।