জাপান ও বাংলাদেশী দুই বন্ধুর চেষ্টায় নড়াইলের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত ‘এমদাদ-হনজো আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়’ এর ৬ ছাত্রী শিক্ষা সফরে সুর্যোদয়ের দেশ জাপানে যাচ্ছে। ৯ মে থেকে ১৭ মে পর্যন্ত তারা জাপানে অবস্থান করবেন।
সৌভাগ্যবান এসব ছাত্রীরা হলেন ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর সৈয়দা রাইসা, মুসলিমা জাহান তুলি, নবম শ্রেণীর সৈয়দা আতিফা রহমান, মোসাঃ রুকাইয়া শেখ জেরিন, সৈয়দা তাসনিয়া খানম ও অষ্টম শ্রেণীর মোসাঃ সিনথিয়া। ছাত্রীদের সাথে যাচ্ছেন এমদাদ-হনজো আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়য়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. সৈয়দ এমদাদুল হক(পিএইচডি) ও বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মোসাঃ মৌসুমী খানম।
জানাগেছে, ৯ মে বিকালে হযরত শাহ্জালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর থেকে জাপানের উদ্দেশ্যে রওনা দিবে। শিক্ষা সফরের খরচ বহন করছেন জাপানী বন্ধু জাপানের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মি. রিউসুকে হন্জো। জাপানে অবস্থানকালে এসব শিক্ষার্থীরা জাপানে টোকিও এবং কিয়োটা সিটিতে যাবে। এসময় টোকিও ইউনিভার্সিটি ও কিয়োটা ইউনিভার্সিটি ঘুরে দেখবে। এছাড়াও জাপানের বিভিন্ন দর্শনী স্থান ঘুরে দেখবে।
গ্রামের একটি বিদ্যালয় হতে জাপানে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে ভীষণ খুশি এসব ছাত্রীরা। দশম শ্রেণীর সৈয়দা রাইসা বলেন, ‘জাপানে যেতে পারবো কখনো ভাবি নাই। সুর্যোদয়ের দেশ জাপান সম্পর্কে বইয়ে অনেক কিছু পড়েছি। সেই দেশের যাবার সৌভাগ্য হয়েছে। জীবনে এমন সুযোগ পেয়ে অনেক খুশি।’
নবম শ্রেণীর সৈয়দা আতিফা রহমান বলেন,‘ আমাদের নোয়াগ্রামের কৃতি সন্তান ড. সৈয়দ এমদাদুল হক (পিএইচডি) ও জাপানী বন্ধু মি. রিউসুকে হন্জো এর আন্তরিক চেষ্টায় আমাদের গ্রামে যে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর মাধ্যমে এলাকার মেয়েরা শিক্ষার সুযোগ পাচ্ছে। নারী শিক্ষার অগ্রসরে বিদ্যালয়টি প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে। বিদ্যালয় হতে বিনা খরচে জাপান সফরের সুযোগ করে দেয়ায় আমাদের বিদ্যালয়টি আরো এগিয়ে যাবে। আমরা জাপান ঘুরে এসে সেই অভিজ্ঞতা সকল ছাত্রীদের সাথে শেয়ার করবো। আমরা এমন সুযোগ পেয়ে ভীষণ খুশি।’
বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার স্বপ্নদ্রষ্টা ড. সৈয়দ এমদাদুল হক (পিএইচডি) বলেন,‘ এই বিদ্যালয়টি জাপানের অর্থায়নে পরিচালিত হওয়ায় জাপানী বন্ধু মি. রিউসুকে হন্জো শিক্ষা সফরের সার্বিক আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেন। বাংলাদেশ এবং জাপানের মধ্যকার বন্ধনকে আরো দৃঢ় করা, উভয় দেশের রীতি নীতি সম্পর্কে ধারণার বহিঃপ্রকাশ এই শিক্ষা সফরের মুল উদ্দেশ্য। আমাদের ছাত্রীদের জন্য এই সফরটি দারুন আনন্দের। অনেকে রাজধানী ঢাকায় যাননি, আজ তারা জাপান সফরে যাচ্ছে। আগামীতেও বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রীদের জাপান সফরের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া শিক্ষা বৃত্তি নিয়ে যাতে জাপানে পড়াশোনা করতে পারে সে ব্যাপারে চেষ্টা রয়েছে।’
উল্লেখ্য যে, লোহাগড়া উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন ড. সৈয়দ এমদাদুল হকের নিজের ক্রয়কৃত ৫০ শতক জমির ওপর ৫তলা ফাউন্ডেশন দিয়ে দ্বোতলা ভবন করে ২০১৫ সালে ৬ষ্ঠ হতে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান শুরু হয়। ইতিমধ্যে বিদ্যালয়টি যশোর শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক একাডেমীক স্বীকৃতি পেয়েছে। ইতিমধ্যে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্তরিকতায় প্রতিবছরই ভালো ফলাফল করে আসছে।