ভালোবাসার টানে জাহিদের সঙ্গে নরসিংদীতে চলে এলেন মালয়েশিয়ান তরুণী রুহানা রুহি। এরপর মুসলিম রীতি অনুযায়ী বিয়ে হলো তাদের। সোমবার (২৬ জানুয়ারি) বাঙালি ঘরানায় হয়েছে তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। ছিল গায়ে হলুদসহ বিয়ের নানা আয়োজন। ভিনদেশি তরুণীকে কাছে পেয়ে উচ্ছ্বসিত পরিবার ও এলাকাবাসী। জাহিদ খান নরসিংদী সদর উপজেলার হাজিপুর এলাকার মৃত বাচ্চু মিয়ার ছোট ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালে জীবিকার তাগিদে মালয়েশিয়ায় যান জাহিদ। সেখানে একটি খেলনার দোকানে সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করার পাশাপাশি ইউটিউবে একটি আইডি খোলেন। নিজের মোটরসাইকেল দিয়ে বিভিন্ন মানুষের ফটো আর ভিডিও তৈরি করে দিতেন। ইউটিউবের সেই ব্লগ ভিডিও নিয়মিত আপলোড দিতেন।
সেই সূত্রে পরিচয় মালয়শিয়ার নাগরিক রুহি রুহানার সঙ্গে। তিনি পেশায় একটি গাড়ি উৎপাদন কোম্পানির প্রসাশনিক কর্মকর্তা। তারপর থেকে সম্পর্ক গড়ে উঠে দুজনের মধ্যে। দীর্ঘ দুই বছর সম্পর্কের পর সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করার। প্রথমে তরুণীর পরিবার রাজি না হলেও পরে মালয়েশিয়ায় তাদের বিয়ে হয়। সেখানে জাহিদের পরিবারের লোকজন না থাকায় প্রেমিক জাহিদের সঙ্গে গত ১৫ জানুয়ারি মালয়েশিয়া থেকে নরসিংদীর হাজিপুরে চলে আসেন এই তরুণী।
পরে সোমবার মুসলিম রীতিনীতি অনুয়ায়ী তাদের দুজনের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা হয়। এর আগের দিন গায়ে হলুদসহ বিয়ের নানা আয়োজনও ছিলো মনোমুগ্ধকর। বাংলাদেশি তরুণের সাথে ভিনদেশি তরুণীর বিয়েতে খুশি পরিবার ও এলাকাবাসী।
জাহিদের ভাই আশিক আহাম্মেদ বলেন, ওদের ভালোবাসার মাধ্যমে দুই দেশের মানুষের মধ্যে আত্বীয়তার সম্পর্ক তৈরি হলো। রুহি খুবই দ্রুত আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে না সে ভিনদেশি। মনে হচ্ছে সে আমাদেরই আপনজন। সে আন্তরিকতার সঙ্গে সবার সঙ্গে মেলামেশা করছে।
মালয়েশিয়ান তরুণী রুহি বলেন, ফটোশুট করতে গিয়ে পরিচয়, সেখান থেকে ভালোবাসা শুরু। জাহিদ মানুষ হিসেবে খুব ভালো। সে আমার খুব যত্ন করে। তার কাছে ভাষা, খাবার দেশ সম্পর্কে জানতে পেরেছি। মালয়েশিয়ায় বিয়ে হলেও ওদের পরিবারের কেউ না থাকায় আমরা আবার বিয়ে করেছি। নিজের পরিবারকে মিস করলেও এতো বড় পরিবারে সবার সঙ্গে থেকে তাদের ভালোবাসায় সব ভুলে যাই। আমার বাংলাদেশের সবকিছু অনেক ভালো লাগে।
জাহিদ হাসান বলেন, আমি ছয় বছর ধরে মালয়েশিয়ায় রয়েছি। মোটরসাইকেল দিয়ে ফটোশুট করার বাহানায় তার সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে আমরা সম্পর্কে জড়াই। রুহির পরিবার ভিনদেশি ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক প্রথমে মেনে নিতে চায়নি। পরে সে বোঝালে তার পরিবার মেনে নেয়। রুহি আমাকে ভালোবেসে ভাষা শিখেছে। তাকে মালয়েশিয়ান বিভিন্ন রেস্টুরেন্টে নিয়ে বাংলাদেশি খাবারের সঙ্গে পরিচয় করিয়েছি। পরে তাকে দেশে নিয়ে এসেছি। এখন তাকে বাংলাদেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরিয়ে দেখাব। যাতে সে দেশের মানুষ ও প্রকৃতি সম্পর্কে জানতে পারে।