জুড়ীতে কিশোরীদের নিয়ে ব্র্যাকের স্বপ্নসারথি গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান

সাইফুল ইসলাম সুমন, জুড়ী

“পার করেছি আঠারো, পেরিয়ে যাব পাহাড়ও” এই স্লোগানকে সামনে রেখে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলায় ব্র্যাক সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসূচির আয়োজনে স্বপ্নসারথি গ্র‍্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ১০টি স্বপ্নসারথি দলের ৫৩ জন কিশোরীকে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ায় সার্টিফিকেট, ফুল ও অনুষ্ঠানের শ্লোগান সম্বলিত ১টি করে মগ উপহার দেয়া হয়। বৃহস্পতিবার (০৯ অক্টোবর) দিনব্যাপী উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত স্বপ্নসারথি গ্র‍্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাবলু সূত্রধর। এসময় উপস্থিত ছিলেন জুড়ী থানার ওসি মোঃ মুরশেদুল আলম ভূঁইয়া, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন, জুড়ী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সুমন, ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসুচি মৌলভীবাজারের ডেপুটি ম্যানেজার (টেকনিক্যাল) মোঃ নজরুল ইসলাম, ব্র্যাকের সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনি সুরক্ষা কর্মসুচি জুড়ী উপজেলার কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জুড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বাবলু সূত্রধর বলেন, আজকের এই আয়োজন নিঃসন্দেহে একটি অনন্য উদ্যোগ। “স্বপ্ন সারথি” কর্মসূচির সদস্য যারা সচেতন থেকে নিজেদের বাল্যবিবাহ রোধ করেছেন, ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে না করে নিজেদের জীবনের সিদ্ধান্ত নিজেরা নিয়েছেন, তারা আজকে প্রকৃত সফল। আমি প্রত্যেককে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভকামনা। তিনি বলেন, স্বপ্নসারথি মেয়েরা আজ প্রমাণ করেছে, ইচ্ছা থাকলে কোনো বাধাই অতিক্রম করা অসম্ভব নয়। আঠারো পার হয়ে যে মেয়েরা বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক ব্যাধিকে না বলেছে, তারা আজ সমাজে পরিবর্তনের অগ্রদূত। তাদের এই সাহস ও সচেতনতা আমাদের সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে।
তিনি আরও বলেন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতা, শিক্ষা ও আত্মবিশ্বাসই প্রধান হাতিয়ার। পরিবার ও সমাজকে একসাথে কাজ করতে হবে যাতে প্রতিটি কন্যাশিশু নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে বেড়ে উঠতে পারে।

সভায় বক্তারা কিশোরীদের ১৮ বছর পূর্ণ করার তাৎপর্য এবং তাদের ভবিষ্যৎ পথে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাস ও আইনি সুরক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেন। স্বপ্নসারথি কর্মসূচির মাধ্যমে কিশোরীরা যে শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জন করেছে, তা তাদের সমাজের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

এই অনুষ্ঠান যেন জুড়ীর কিশোরীদের হৃদয়ে জাগিয়েছে নতুন স্বপ্নের আলো, বাল্যবিবাহ ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাদের লড়াইকে শক্তিশালী করে তুলবে এক অটুট প্রতিজ্ঞার পথে, গর্বিত ও অমর।

আরো দেখুনঃ