নড়াইল জেলা কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমানের অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। দুর্নীতির কারণে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংস্কৃতি বিষয়ক সচিবের কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে তদন্ত কমিটি।
এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমানের অনিয়ম, দুর্নীতি ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগে স্বাক্ষ্য দেন জেলার ৩২জন সাংস্কৃতিক কর্মী ও ভুক্তভোগী অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টরা। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এম এম আরাফাত হোসেনের কাছে কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমানের অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করেন ভুক্তভোগীরা।
জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতৃবৃন্দসহ ভুক্তভোগীরা জানান, কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমানের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে গত ১৩ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরীর কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়। এ প্রেক্ষিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আরাফাত হোসেনকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, হামিদুর রহমান ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে জেলা কালচারাল অফিসার হিসেবে নড়াইলে যোগদান করেন। এরপর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শিল্পী, বিচারক ও কলাকুশলীদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি টাকা না দিয়ে আত্মসাত করার অভিযোগ পাওয়া যায়। অনুষ্ঠানের জন্য যে টাকা বরাদ্দ থাকে, তাও ঠিকমত খরচ করেন না। ২০২৩ সালের মধ্যভাগে জেলা শিল্পকলা একাডেমির অডিটোরিয়ামের লাইট, সাউন্ড ও ভবন সংস্কারে ১০ লাখ টাকার কাজ হলেও তা দাযসারা ভাবে করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। খাতা-কলমে টেন্ডার দেখিয়ে এ কাজ মূলত নিজেই করেন। অভিযোগ রয়েছে, যোগদানের এক বছরে প্রায় ৩০ লাখ টাকার দুর্নীতি করেছেন তিনি। এছাড়া শিল্পকলা একাডেমিতে সংগীতের বিভিন্ন শাখার ক্লাস চলাকালীন সময়ে কালচারাল অফিসার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।
এ ব্যাপারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নড়াইলের সভাপতি মলয় কুন্ডু জানান, জেলা কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমান যোগদানের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ লাখ টাকা দুর্নীতি করেছেন। তদন্ত কমিটিও তার দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। এমন দুর্নীতি পরায়ন ব্যক্তিকে আমরা নড়াইলে দেখতে চাই না। তাকে অপসারণ করা না হলে মানববন্ধন, বিক্ষোভসহ বৃহত্তর আন্দোলন ঘোষণা করা হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরী বলেন, জেলা কালচারাল অফিসারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব মহোদয়ের কাছে রোববার (১১ ফেব্রæয়ারি) প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, জেলা কালচারাল অফিসার হামিদুর রহমানের দুর্নীতি ও অনিয়মের খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে গত ১৫ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়।
এর আগে ময়মনসিংহ জেলা কালচারাল অফিসার হিসেবে কর্মকত থাকা অবস্থায় ব্যাপক দুর্নীতির কারণে হামিদুর রহমানকে প্রত্যাহার করে ঢাকায় বদলি করা হয়। এ নিয়ে ওই সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।
এফআর/অননিউজ