ঝিনাইদহের শৈলকুপায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অনিয়মের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে তিন সাংবাদিক হুমকি, লাঞ্ছিত ও অপদস্থ হয়েছেন। এ ঘটনায় শৈলকুপা পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শৈলকুপা ১৮নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিকরা হলেন—বাংলাদেশ পোস্টের রোভিং করেসপন্ডেন্ট দেলোয়ার কবীর, বাংলাদেশের খবরের ঝিনাইদহ জেলা প্রতিনিধি এম বুরহান উদ্দীন ও ভোরের আকাশ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি সুজন বিপ্লব।
সাংবাদিকরা জানান, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পরিচ্ছন্নতার নামে টাকা উত্তোলনের অভিযোগে তারা তথ্য সংগ্রহ করতে যান। অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহারের বক্তব্য শেষে বের হওয়ার সময় তার স্বামী এনায়েত হোসেন সেখানে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন।
তিনি মারধরের হুমকি দিয়ে প্রশ্ন তোলেন, কেন তারা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছেন। এ সময় তিনি অশালীন ভাষা ব্যবহার ও লাঞ্ছিত করেন বলেও অভিযোগ করেন সাংবাদিকরা।
জানা যায়, অভিযুক্ত এনায়েত হোসেন শৈলকুপা মহিলা কলেজের শিক্ষক হলেও রাজনৈতিক প্রভাব ও কথিত সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে আসছেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে টেন্ডারবাজি ও নানা অনিয়মে জড়িত ছিলেন বলেও এলাকায় অভিযোগ রয়েছে।
সিনিয়র সাংবাদিক দেলোয়ার কবীর বলেন, ‘আমরা অফিসকক্ষ থেকে বের হওয়ার সময় হঠাৎ এনায়েত হোসেন এসে আমাদের ওপর চড়াও হন। তিনি হুমকি দিয়ে ঘটনাটি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করারও হুঁশিয়ারি দেন।’
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিপুল চক্রবর্তী জানান, ‘সাংবাদিকরা তথ্য নিয়ে চলে যাচ্ছিলেন। তখন প্রধান শিক্ষকের স্বামী এনায়েত হোসেন এসে তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।’
এ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও এনায়েত হোসেন ফোন ধরেননি। তবে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার ঘটনাটির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘সম্পর্কের খাতিরে এমন ব্যবহার হয়েছে।’
শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নিগ্ধা দাস বলেন, ‘সাংবাদিকদের কাজে বাঁধা ও লাঞ্ছিত করার ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হবে।’
শৈলকুপা থানার ওসি মাসুম খান বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে সাংবাদিকদের কাজে বাঁধা ও লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জেলা-উপজেলা পর্যায়ের সাংবাদিক সংগঠনগুলো তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
jn