‘বৈষম্য ঘোচাও,সাম্য বাড়াও/ মানবাধিকারের সুরক্ষা দাও’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ঝিনাইদহে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস পালিত হয়েছে। গতকাল সকালে ঝিনাইদহের পুরাতন ডিসি কোর্ট চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের করা হয়, র্যালিটি শহরের পায়রা চত্বরে মানব বন্ধন কর্মসূচী পালনের মাধ্যমে শেষ হয়। জেলা মানবাধিকার ফোরাম এর ব্যানারে বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা,ওয়েল ফেয়ার এফোর্টস (উই) সহ বেশ কয়েকটি বে-সরকারী সংস্থা এই কর্মসূচীর আয়োজন করে।
জেলা মানবাধিকার ফোরামের সভাপতি আমিনুর রহমান টুকুর সভাপতিত্বে কর্মসূচীতে বক্তব্য রাখেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এন এম শাহ জালাল, ডাঃ রেজা সেকেন্দার, সুব্রত কুমার মল্লিক, চন্দন বসু মুক্ত, হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান এবং ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি বিশিষ্ট কলামিস্ট,সাংবাদিক এম এ কবীর। কর্মসূচির সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন মানবাধিকার ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শরিফা খাতুন।
বক্তাগন বলেন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নীত করার বিষয়ে কথা হলেও এ নিয়ে কার্যকর কোনও পদক্ষেপ নেই। দেশে আগের মতোই গুম বা কথিত বন্দুকযুদ্ধ ঘটেই চলছে। সংঘালঘু নির্যাতন, ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন, রাজনৈতিক অধিকার, মত প্রকাশের অধিকার ক্রমশ সংকুচিত হয়ে আসছে।
বক্তাগন বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন দাবি করে আসছে,দেশে ক্রমান্বয়ে মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নীত হচ্ছে। স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েদের অংশগ্রহণে রচনা প্রতিযোগিতা, তরুণদের জন্য মানবাধিকারের কোর্সের আয়োজন করা হচ্ছে।
বক্তারা বলেন ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অ-গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। গুম-খুন, বন্দুকযুদ্ধ বা মত প্রকাশের স্বাধীনতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে তাদের আগ্রহ কম। তদন্তের এখতিয়ার নেই বলে তারা এসব বিষয় এড়িয়ে যায়। মানুষের কথা বলার অধিকার কিংবা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের মতো গুরুতর বিষয় নিয়েও মানবাধিকার কমিশন কোনও কথা বলে না।
বক্তগন বলেন, ‘মানুষের কথা বলার যে স্বাধীনতা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে এক ধরনের ভয়ের সংস্কৃতি চলমান, সেল্ফ সেন্সরশিপ সংবাদকর্মীদের মধ্যে যেমন রয়েছে, তেমনি সমগ্র সমাজেই এটির ভয়াবহতা রয়েছে। ফলে মানুষের যে মৌলিক অধিকার, সে যে কথা বলবে, সেই সাহস তারা হারিয়ে ফেলেছে। এটি জবাবদিহিতাকে নিশ্চিত করে না। বরং এটি কর্তৃত্ববাদী শাসনকে পাকপোক্ত করে। এভাবে কখনও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি সম্ভব নয়।’
তারা বলেন,মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নীত করতে হলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন। যেহেতু সরকারের মাধ্যমেই সবকিছু পরিচালিত হয়। তাই রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতিও সম্ভব নয়।