ঝিনাইদহে বিএনপি ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। ভাংচুর করা হয়েছে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান।
সোমবার দুপুরে শহরের পুরাতন ডিসি কোর্ট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন উপলক্ষে ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব চত্বরে বিএনপি’র
নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকে। এসময় মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস উপলক্ষে জেলা ছাত্রলীগ সরকারি কেসি কলেজ থেকে
একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি শহরের পুরাতন ডিসি কোর্টের সামনে পৌছালে অপর দিক থেকে আসা বিএনপি’র
মিছিলের নেতাকর্মীদের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা
ঘটে। বিএনপি নেতাকর্মীদের ধাওয়ায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পিছু হটে সদর থানার মধ্যে চলে যায়। এতে ঝিনাইদহ
মার্কেন্টাইল ব্যাংকের এক কর্মকর্তাসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা শহরে পোস্ট অফিস মোড়ে
অবস্থান নিলে বিএনপি নেতাকর্মীরা যুবলীগ নেতা আশফাক মাহমুদ জনের মালিকাধীন মার্কেটের ‘বন্ড’ নামে একটি
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের গ্লাস ভাংচুর করে।
পরে বিএনপি নেতাকর্মীরা শহরের মডার্ন মোড়ে অবস্থান নিলে ছাত্রলীগ
আবারো বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে জেলা বিএনপির অফিসে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভাংচুরের চেষ্টা চালায়। এ সময় ছাত্রলীগ
নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সাথে ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠি চার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
বর্তমানে শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান জানান, বিএনপির মিছিল থেকে তাদের নেত্রীকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও বাজে মন্তব্য করলে ছাত্রলীগ প্রতিবাদ করে। এ সময় বিএনপি আমাদের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে ছাত্রলীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিএনপিকে ধাওয়া দিলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান জানান, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত ঝিনাইদহ শহরে বিএনপিকে কোন নৈরাজ্য ও আগুন সন্ত্রাস করতে দেবে না। ছাত্রলীগ রাজপথে থেকে তাদের প্রতিহত করবে।
এই সংঘর্ষে তাদের কোন নেতাকর্মী আহত হননি বলেও আল ইমরান দাবী করেন। অপরদিকে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট এম এ মজিদ অভিযোগ করেন,
বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের সামনে ছাত্রলীগ রামদা, ডাসা ও চাপাতি নিয়ে হামলার চেষ্টা করলে তারা ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিহত করে। এ সময় বিএনপির ধাওয়া খেয়ে ছাত্রলীগ সদর
থানার মধ্যে আশ্রয় নেয়। এম এ মজিদ দাবী করেন হামলায় তাদের ৭ জন নেতাকর্মী আহত হন। আহতরা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে
চিকিৎসা নিয়েছেন। ঝিনাইদহ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার জানান, বিএনপি ও ছাত্রলীগের পৃথক
কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। উভয়পক্ষ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে একে অপরের প্রতি হামলার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের
ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে কোন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। তবে
কোন ক্ষতিগ্রস্থ দোকান মালিক অভিযোগ দিলে আইনী ব্যবস্থা
গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।