ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে জুলাই যোদ্ধা তালিকায় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের নাম অন্তভূর্ক্ত করা হয়েছে। ৪ আগষ্ট পীরগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় অংশ নিয়েও জুলাই যোদ্ধা তালিকায় নাম প্রকাশ হওয়ায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সাবেক সমন্বয় সহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে। তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেওয়ার জন্য বুধবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন আলমগীর হোসেন সৈকত নামে এক সাবেক সমন্বয়ক।
জানা গেছে, পীরগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন রায় গত ৪ আগষ্ট বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সাথে যোগ দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় অংশ নেয়। সরকার পতনের পর পরেই সে তার নিজস্ব ফেসবুকে গণঅভ্যুত্থান বিরোধী একের পর এক পোষ্ট করতে থাকে। আওয়ামীলীগের হয়ে অনলাইনে বিভিন্ন প্রচার প্রচারণাতে সরব ভূমিকা পালন করতেও পিছিয়ে নেই সুমন রায়। পতনের পরেও আওয়ামী স্বৈরাচারের পক্ষে বিভিন্ন ইস্যুতে সরব থাকায় চলমান ডেভিলহান্ট অপারেশনে তাকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায় পুলিশ। জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েই আবারো আওয়ামীলীগের হয়ে কাজ শুরু করেছে সুমন রায়। এদিকে যাচাই বাছাইয়ের পর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জুলাই যোদ্ধাদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। সে তালিকায় হাজীপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন রায়ের নাম রয়েছে ৩ নম্বর সিরিয়ালে। এ নিয়ে জুলাই আন্দোলনের সাথে সর্ম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তালিকা থেকে তার নাম বাদ দেওয়ার জন্য বুধবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন আলমগীর হোসেন সৈকত নামে এক সাবেক সমন্বয়ক।
সাবেক সমন্বয়ক আলমগীর হোসেন সৈকত জানান, সুমন রায় ছাত্রলীগের ইউনিয়ন শাখার পোষ্টেড নেতা। চলমান ডেভিল হান্ট অপারেশনে পুলিশ তাকে জেল হাজতেও পাঠিয়ে ছিল। জেল হাজত থেকে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর অসুদপায় অবলম্বন করে জুলাই যোদ্ধা হিসেবে সে তার নাম তালিকাভূক্ত করেছে। এখন সে জুলাই যোদ্ধা পরিচয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের চেষ্টা করছে। তার অপকর্মে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। জুলাই যোদ্ধা হিসেবে তার নাম বাদ না দিলে আন্দোলন শুরু হবে।
ছাত্রলীগের নেতা হয়েও জুলাই যোদ্ধা তালিকায় নাম আসার বিষয়ে সুমন রায়ের মতামত জানতে তার মোবাইলে কল করা হলে তিনি জানান, জুলাই আন্দোলনের আগে হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমও ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। আমিও কোটা বিরোধী আন্দোলনে জড়িত ছিলাম। কিন্তু সরকার পতনের পক্ষে ছিলাম না। সরকার পতনের বিপক্ষে থেকেও কিভাবে জুলাই যোদ্ধা তালিকায় নাম আসলো এ প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতেই তিনি সংযোগ কেটে তার মোবাইল ফোনটি বদ্ধ করে দেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রকিবুল হাসান বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি। পীরগঞ্জের জুলাই যোদ্ধাদের তালিকা আমি এখানে যোগদার করার কয়েক মাস আগেই প্রকাশ হয়েছে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। তথ্য গোপন করে জুলাই যোদ্ধা তালিকায় নাম আসার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।