ডেমরায় ঝুলন্ত উদ্ধার হওয়া সোনাগাজীর যুবকের দাফন সম্পন্ন

জাবেদ হোসাইন মামুন, সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি

ডেমরায় ঝুলন্ত উদ্ধার হওয়া সোনাগাজীর যুবক ফখরুল ইসলামের (২৮) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে নয়টায় নিজ বাড়ি সংলগ্ন সেনেরখিল গ্রামের জামে মসজিদের সামনে নামাজে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

সে ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরদরবেশ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম ইলিয়াস হোসেনের তৃতীয় ছেলে এবং একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম ভুট্টুর ছোট ভাই।

গত ৮ ডিসেম্বর সোমবার বিকালে রাজধানী ঢাকার ডেমরা থানার মুস্তাক হাজি এলাকার খালের পাশে একটি গাছে ঝুলছিল ফখরুলের মরদেহ। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে ৯ডিসেস্বর মঙ্গলবার রাত আটটায় গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয় তার মরদেহ। তার বড় ভাই চরদরবেশ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ভুট্টো সৌদি আরব থেকে মুঠো ফোনে জানান, তার ভাই ফখরুল এলকায় ইলেক্ট্রনিক মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করত।

সে আওয়ামী পরিবারের সন্তান হলেও এলাকায় কারো সঙ্গে কখনও রাজনৈতিক প্রভাব খাটাননি। আ.লীগ সরকারের পতনের পর সে ঢাকা শহরের ডেমরা এলাকায় একটি বোতলজাত গ্যাস বিক্রির দেকানে চাকরি নেয়। এদিকে ইউরোপের দেশ ইতালিতে ওয়ার্ক পারমিট (নোলস্তা) ইস্যু হয়েছে তার। ভিসা প্রসেসিংও প্রায় সম্পন্ন । আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে সে ইতালি চলে যাওয়ার কথা ছিল। তার ৪ ও ৫ বছরের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে, স্ত্রী ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।

তার শ্বশুর বাড়ি নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরপার্বতী গ্রামে। তার শ্বশুর তাকে স্বল্প বেতনে দোকানের চাকরিটি ব্যবস্থা করে দেন। আমরা কার কাছে বিচার চাইব? লাশের ময়না তদন্ত হয়েছে।

যদি সঠিক ময়না ততন্ত প্রতিবেন পাওয়া যায়, তখন এটি হত্যা না আত্মহত্যা জানা যাবে। তার স্ত্রী রুবিনা আক্তার বলেন, গত শনিবার রাতে আমার সঙ্গে সর্বশেষ কথা হয়। পরে সকালে তার মুঠোফোন বন্ধ পেয়ে অনেক স্থানে খোঁজ করেও সন্ধান পাইনি। সোমবার রাতে ডেমরা থানা পুলিশের মাধ্যমে তার মৃত্যুর সংবাদ পাই।

তিনি আরো বলেন, কেউ কেউ বলছে আমার স্বামী আত্মহত্যা করেছে। এটি আত্মহত্যা হতে পারেনা। আমার স্বামীর মুখমণ্ডলে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্পষ্ট আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আত্মহত্যা করলে আঘাতের চিহৃ থাকবে কেন? আমার দৃঢ় বিশ্বাস এটি হত্যাকাণ্ড।

ডেমরা থানার ওসি তাইফুর রহমান বলেন, লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেছে। ঢামেকে ময়না তদন্ত করা হয়েছে। এটি হত্যাকাণ্ড নাকি আত্মহত্যা, ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া ছাড়া বলা যাবেনা।

ময়নাতদন্ত শেষে মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আরো দেখুনঃ