বিএনপির নেতা কর্মীদের উপর হামলা মারধর ও চাঁদা দাবির অভিযোগে নীলফামারী-১ আসনের (ডোমার-ডিমলা) সাবেক এমপি আফতাব উদ্দিন সরকার ও ডোমার থানার সাবেক ওসি মোয়জ্জেম হোসেনের নামে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডোমার আমলী আদালত নীলফামারীতে মামলা দাখিল করলে বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে ডোমার থানাকে এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন।
মামলাটি দায়ের করেছেন ডোমার উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও তৎকালীন উপজেলা যুব দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ বিন আমিন সুমন। মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী আবু সোয়েম সরকার মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার অভিযোগে বাদী দাবি করেছেন তৎকালীন বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপির নেতা কর্মীদের হয়রানি করার উদ্দেশ্যে মামলার ১নং আসামি সাবেক এমপি আফতাব উদ্দিন সরকার ও ২নং আসামি তৎকালীন সময়ের ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন এর সহিত গোপনে শোলা পরামর্শ করে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীদের উপর মামলা হামলাসহ নির্বিচারে নির্যাতন শুরু করে। এবং তাহাদেরকে ধরে থানায় নিয়ে এসে চাঁদার টাকা আদায় করতে থাকে। চাঁদার টাকা না দিলে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হতো।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিগত ২০১৫ইং সালের ১৪ই মার্চ সন্ধ্যায় ডোমার শহরের কৃষি ব্যাংক সংলগ্ন সাধন ভৌমিকের চায়ের দোকানে তৎকালীন যুবদল নেতা মাসুদ বিন আমিন সুমন যুবদল নেতা হারুন, পারভেজ ও রতন আলীসহ চা খেতে আসেন। সেই সময় ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ৩০-৪০জন পুলিশ সদস্যসহ দোকানে এসে তাদেরকে চায়ের দোকান থেকে বের করে মাসুদ বিন আমিন সুমনের উপর কোন কারণ ছাড়াই লাঠি ও বন্দুকের বাট দিয়ে বেধড়ক মারধর করতে থাকে। এসময় তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। সেই সময় স্থানীয় বিএনপি কর্মী ও যুবদল নেতারা প্রতিবাদ করিলে ওসি মোয়াজ্জেম তাহার পুলিশ সদস্যরা মামলার বাদী সুমন এবং যুবদল নেতা হারুন, পারভেজ ও রতন আলীকে লাঠিপেটা করিতে থাকিলে সুমন মাটিতে লুটিয়া পড়ে। তখন পুলিশ সদস্যরা তাকে চ্যাংদোলা করে যুবদল নেতা হারুন পারভেজ ও রতন আলীকে পুলিশ ভ্যানে করে ডোমার থানায় নিয়ে আসে। ডোমার থানায় নিয়ে আসার পর ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন মামলার ১নং আসামি সাবেক এমপি আফতাব উদ্দিন সরকারের নির্দেশ পেয়ে মাসুদ বিন আমিন সুমনের নিকট ১০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে।
চাঁদা না দিলে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেওয়া হয়। মাসুদ বিন আমিন সুমন চাঁদা দিতে অস্বীকার করিলে ওসি মোয়াজ্জেম লাঠি দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে। এবং হুমকি দেয় যে ডোমার ডিমলায় বিএনপির লোকজন রাজনীতি করতে পারবে না। এখানে আওয়ামী লীগের এমপি আফতাব ছাড়া কারো কথা বলা যাবে না বলে তাকে কিল ঘুসি মেরে হাজত খানায় আটকে রাখে। এর কিছুক্ষণ পর ওসি মোয়াজ্জেমের নির্দেশে ১জন পুলিশ সদস্য মামলার বাদী সুমনের বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে হুংকার দিয়ে বলে এই দেশে বিএনপির থাকার কোন অধিকার নেই। তোকে ক্রস ফায়ার করে দিবো। বিএনপির কর্মীদের থাকতে হইলে চাঁদা দিতে হবে। তা নাহলে মেরে লাশ গুম করে দিবো।চাঁদা না দেয়ায় ঘটনার পরের দিন ১৫ মার্চ তাহাদের চোখ বেধে হাতকড়া পড়িয়ে চারজনকে নীলফামারীতে নিয়ে আসে এবং অগ্নিসংযোগ ভোট কেন্দ্রে হামলা ও নাশকতার ২টি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয় তাদের নামে। এখন তারা সেই মামলায় নিয়মিত হাজিরা দিয়ে আসতেছে।
সাবেক এমপি আফতাব উদ্দিন সরকারের নির্দেশে ২নং আসামি ওসি মোয়াজ্জেম এর পরিকল্পনায় অজ্ঞাত নামা ৩০-৪০জন আসামি সুমনসহ ৪ জনকে অবৈধ ভাবে আটক করে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে এবং মৌলিক অধিকার হরণ পূর্বক চাঁদা দাবি করে ক্রস ফায়ারের উদ্দেশ্য বন্দুকের নল তাক করে অপরাধ করেছেন বলে জানান মামলার বাদী মাসুদ বিন আমিন সুমন।
সূত্রঃ বিডি24লাইভ
একে/অননিউজ24