ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলে সরস্বতী পূজাতে কনসার্টে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের কয়েক দফাতে সংঘর্ষের ১৪ জন আহত এবং ১ জন রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জগন্নাথ হল শাখা লীগের একটি সূত্র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলটির এক কর্মী সংবাদ প্রকাশকে বলেন, গত সরস্বতী পূজাতে কনসার্টকে ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে, সেটি সেখানেই শেষ হয়ে যায়। পরবর্তী পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে আবার মধুর ক্যান্টিনে গতকাল ঘটনা ঘটে। পুরো ঘটনায় ১৫ জন আহত হয়েছেন এবং এর মধ্যে একজনের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক।
আইসিইউতে ভর্তি আশঙ্কা জনক ছাত্রলীগ নেতার নাম অপূর্ব চক্রবর্তী। তিনি ঢাবির জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফর্মেন্স স্টাডিজ বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী।
জানা যায়, সংঘর্ষে মাথা ফেটে যায় অপূর্ব চক্রবর্তীর। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখানে তাঁর মাথায় আটটি সেলাই দেওয়া হয়। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, কনসার্টে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত চলে যাওয়ার সময় ইনানের অনুসারী হলটির শীর্ষ পদপ্রত্যাশী গণেষ ঘোষের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এটা নিয়ে গনেশ সৈকতের কাছে ক্ষমা চায়। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতারা চলে যাওয়ার পর হল মাঠে ইনানের গ্রুপ ও সৈকতের গ্রুপ বিষয়টি নিয়ে ঝামেলায় জড়ায়। এর জের ধরে লাঠিসোঁটা নিয়ে রাত ৪ টা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলতে থাকে। পরে শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে মধুর ক্যান্টিনে ইনানের কাছে অপূর্ব বিচার দিতে আসলে সেখানেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন— সৈকতের সমর্থক অপূর্ব চক্রবর্তী, পলাশ রায় সৌরভ, পল্লব মণ্ডল, অর্পণ কুমার বাপ্পি, বিপ্লব পাল, বর্ষণ রয়, কার্তিক কুমার এবং ইনানের অনুসারী শ্রীরূপ কুন্ডু, অপূর্ব, অভি, রিদ্ধি, ধ্রুব, চিন্ময় ও প্রিতম।
ঢাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত বলেন, জগন্নাথ হলের ঘটনার পর বিষয়টি আমি মীমাংসা করে দিয়ে আসি। পরে আমার গ্রুপের সঙ্গে পূর্বশত্রুতার জেরে হলের অন্যান্য কয়েকটি গ্রুপ একত্রিত হয়ে হামলা করা হয়েছে। এ ঘটনার জন্য মধুর ক্যান্টিনে কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদকের কাছে আমার কর্মীরা বিচার দিতে গেলে তার সমর্থকরা আবারও পলাশ এবং অপূর্বসহ কয়েকজনকে মারধর করে।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি খোঁজ নিতে বলেছি। এমন কিছু হয়ে থাকলে বিস্তারিত জানার পর আমরা দেখবো, কে অপরাধী। অপরাধী যেই হোক না কেন, ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.মিহির লাল সাহা বলেন, শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝাবুঝিতে কিছু বিশৃঙ্খলা হয়েছে। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। বিষয়টি উভয়পক্ষের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে মীমাংসা করে দেওয়া হয়েছে।
সূত্রঃ বিডিলাইভ24