বসন্ত আর ভালবাসায় এবার ঠিক সময়েই রক্তরাঙা শিমুল ফুল মিলেমিশে একাকার হয়ে উঠেছে। পয়েলা ফাল্গুন আর ভালবাসা দিবসে শিমুল ফুল ফুটে প্রিয়জনকে এখন হাত ছানি দিচ্ছে। শিমুল ফুল যদি একটি গাছেও ফোটে সেটি হলো মেঘালয় পাহাড় ঘেষা যাদুকাটা নদীর তীরে 'জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগানে'। অন্যান্য বছর নির্ধারিত সময়ের একটু আগে বা পরে ফুল ফুটলেও এবার তার আপন মহিমায় ফুল ফুটেছে। ডালে ডালে ফুটে থাকা হাজারো ফুল পর্যটক প্রেমিদের মনকে রাঙিয়ে তুলছে। সারি সারি বাগানের রক্ত রাঙা ফুল চোখে পড়ছে এবার অনেক দূর থেকেই। ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে এখন দেশের সবচেয়ে বড় শিমুল বাগান। প্রতিদিন হাজারো পর্যটক প্রেমী জড়ো হচ্ছেন এখন শিমুল বাগানে। কেউ আসছেন প্রেমিকা নিয়ে, কেউ আসছেন পরিবার - পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে। এযেনো ভালবাসা দিবসকে পূর্ণরূপ এবং বসন্তে বাউলের মন রাঙিয়েছে। সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, সারি সারি গাছে ফুটে থাকা লাল পাঁপড়ি দেখে পর্যটক প্রেমিরা আনন্দে মেতে উঠেছে
মায়াময় বাগানে এখন জমে উঠেছে শিমুল মায়ার খেলা। লাল ফুলের গালিচা বিছিয়ে রয়েছে শিমুল বাগানে।
জানা যায়, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের যাদুকাটা নদীর তীরবর্তী মেঘালয় পাহাড় ঘেঁষা মানিগাওঁ গ্রাম সংলগ্ন ১০০ বিঘা জমি জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল এক শিমুল বাগান। নদীর ওপারে ভারতের মেঘালয় পাহাড়, মাঝে মায়ার নদী যাদুকাটা আর এপারে রক্তিম ফুলের সমারোহ। ২০০২ সালে বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বৃক্ষপ্রেমী প্রয়াত জয়নাল আবেদীন নিজের প্রায় একশো বিঘা জমিতে শৌখিনতার বসে প্রায় তিন হাজার শিমুল গাছ রোপণ করে ছিলেন। ক্ষণে ক্ষণে বেড়ে ওঠা গাছগুলো এখন হয়ে উঠেছে সারা দেশে পরিচিত এক শিমুল বাগান। বসন্তে শিমুল গাছগুলোতে ফুলে ফুলে ভরে গেছে। ফাগুনের অরুণ আলোয় ফুটেছে বাগানের রক্তরাঙা ফুল। চোখের তৃষ্ণা মেটাতে ফুটে ওঠা টুকটুকে লাল ফুলগুলো দেখতে প্রতিদিন ছুটে আসছেন হাজারো দর্শনার্থী।
ঢাকা থেকে বাগান দেখতে আসা মেহেদী ও পাবেল জানান, দেশে এতো বড় শিমুল বাগান রয়েছে, নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস হতো না। সারা বছর অপেক্ষায় ছিলাম ফাগুন আর ভালবাসা দিবসে এক সঙ্গে রক্ত রাঙা ফুল দেখবো। এখানে এসে ফুলের পাঁপড়ি দেখে আজ স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
বাগানের মালিক প্রয়াত ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জয়নাল আবেদীনের ছেলে আফতাব উদ্দিন জানান, এবার সঠিক সময়েই বসন্তে শিমুল গাছগুলোতে এক সঙ্গে ফুল ফুটেছে। এই শিমুল বাগান তার মরহুম পিতার পরিচয় আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, এখানে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ভলান্টিয়ার এবং পুলিশের নজরদারি রয়েছে। যাতে এখানে আসা পর্যটকরা ইভটিজিংয়ের শিকার না হয়।