পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় এক দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মাহবুব আলম আবু (৩৫) নামে এক যুববের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ওই প্রতিবন্ধী তরুণী প্রায় সাড়ে ৮মাসের অন্তসত্বা হয়ে পড়ার পর বিষয়টি জানা জানি হলে ভিকটিমের পরিবার থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করে।
রোববার (২১ নভেম্বর) রাতে অভিযুক্ত ধর্ষক আবুর নাম উল্লেখ করে থানায় এই ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন ভিকটিম দৃষ্টি প্রতিবন্ধী তরুণীর বাবা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর ধরে তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ভেলকুগছ মুহুরিহাট গ্রামে জয়নাল আবেদীনের বাড়িতে কাজের মেয়ে (বুয়া) হিসেবে কাজ করে আসছিল দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ওই তরুণী।
এর মাঝে জয়নালের ছেলে মাহবুব আলম আবু দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ সম্পর্ক তৈরি করে ওই প্রতিবন্ধী তরুণীকে একাধীকবার ধর্ষণ করে। বিষয়টি ধামা চাপা দেয়ার জন্য তাকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখায় আবু। এক পর্যায়ে ওই তরুণী অন্তসত্বা হয়ে পড়ে।
পরে গত শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) হঠাৎ ওই প্রতিবন্ধী তরুণী অসুস্থ্য হয়ে পড়লে বাড়ির লোকজন তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে অন্তসত্বার বিষয়টি জানা জানি হয়। এর পর থেকে ওই তরুণীকে গ্রহণ না করতে বিভিন্ন রকমের তালবাহানা শুরু করে আবুসহ তার পরিবার।
এক পর্যায়ে বিষয়টি থানা পুলিশকে জানানো হয়। অন্তসত্বার সাড়ে ৮মাস হওয়ার পাশাপাশি শারিরিক ভাবে কিছুটা অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় শনিবার (২০ নভেম্বর) ওই প্রতিবন্ধী তরুণীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। এর আগে অন্তসত্বার বিষয়টি আবুর পরিবার জানতে পারলে বাচ্চা নষ্ট করার বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ওই প্রতিবন্ধীকে ঘরবন্দি করে রাখা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, একটা প্রতিবন্ধী মেয়েকে অন্তসত্বা করার পর আবার তাকে ঘরবন্দি করে রাখা জঘন্ন অপরাধ। তারা বিষয়টি বিভিন্ন মাধ্যমে সমাধান করার চেষ্টা করে। কিন্তু মা- সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই একই সাথে মেয়েটিকে স্ত্রীর মর্যাদা দেয়া হোক।
ভিকটিমের পরিবার অভিযোগ করে বলেন, ঘটনাটি জানার পর তাদের সাথে কথা হয়। কিন্তু দরিদ্র পরিবারের মেয়ে ও প্রতিবন্ধী হওয়ায় তারা মেয়েকে গ্রহণ করছেন না। আমরা এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই। এদিকে প্রতিবেশীরা বলছেন, আইনের মাধ্যমে যেন ওই ছেলের হাতে মেয়েকে তুলে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ধর্ষক মাহবুব আলম আবুসহ তার বাবা জয়নালের সাথে একাধীকবার যোগাযোগ করা হলেও ফোনে পাওয়া যায় নি। অন্যদিকে সাংবাদিকের উপস্থিতি পেয়ে রোববার (২১ নভেম্বর) দুপুরে বাড়ির অন্য সদস্যরাও বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সায়েম মিয়া বলেন, এ ঘটনায় মামলার অভিযোগ পেয়েছি। যেহেতু প্রতিবন্ধী তরুণীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে একই সাথে ঘরবন্দি করা হয়েছে সেহেতু কোন ভাবে অপরাধীকে ছাড় দেয়া হবে না।
আয়েশা আক্তার/অননিউজ24