বিভিন্ন ফ্লেভার ও রঙের চা খেয়েছেন কমবেশি সবাই। হোয়াইট টি থেকে শুরু করে গ্রিন টি সবগুলোরই স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে। তবে দুধ চায়ের প্রতি সবারই দুর্বলতা বেশি। কখনো কি গোলাপি চা খেয়েছেন? অনেকে নিশ্চয়ই ভাবছেন, গোলাপি রঙের আবার চা হয় নাকি!
জানলে অবাক হবেন, বর্তমানে হিমালয়ের উপত্যকা ছাড়িয়ে দক্ষিণ এশিয়ার অনেক রান্নাঘরেই পৌঁছে গেছে গোলাপি চা। অনেকে বলেন নুন চা আবার অনেকেই চেনেন গুলাবি চা হিসেবে।
কাশ্মীরের জনগণের মতে, গোলাপি চা-পানের উপকারিতাও আছে। এর মূল উপকরণগুলো হলো গ্রিন টি, লবণ ও বেকিং সোডা। এই চায়ে লবণ থাকায় পান করলে ডিহাইড্রেশন কম হয়। এ কারণে পাহাড়ি এলাকায় এর ব্যবহার বেড়েছে।
গোলাপি চায়ে লবণ ও বেকিং সোডা ছাড়াও ফ্লেভারের জন্য মেশানো হয় স্টার অ্যানিস। অনেকে আবার মেশান আধা ভাঙা বাদাম। গোলাপি চায়ের স্বাদ ও তৈরির পদ্ধতিও ভিন্ন।
কীভাবে তৈরি করবেন:
এজন্য প্রথমে একটি পাত্রে পরিমাণমতো পানিতে গ্রিন টি ও এক চিমটি বেকিং সোডা দিয়ে অনেকক্ষণ ধরে ফুটিয়ে নিন। বেকিং সোডার কারণেই চায়ের রং গোলাপিতে পরিণত হয়। তবে এজন্য অপেক্ষা করতে হয়।
গ্রিন টিতে বেকিং সোডা মেশানোর ফলে পানি ফুটে উঠলে এর রং প্রথমে গাঢ় বাদামি হয়। এরপর চায়ে গাঢ় মেরুন রং আসতে থাকে। চায়ের রং বদল হতেই তা পরিবেশন করা হয় না।
এরপর একটি হাতায় এই চা নিয়ে এক পাত্র থেকে অন্য পাত্রে বার বার উঁচু-নিচু করে ঢালা হয়। বারবার একই পদ্ধতিতে চা ঢালার কারণে তাতে বাতাস ঢুকে বেশ ফেনা হয় ওঠে। অনেকটা কফি মেশিনে তৈরি কফির মতো।
গোলাপি চা তৈরি করতে কতটা সময় লাগে? লন্ডনের এক চা-বিক্রেতার দাবি, পানীয় তৈরির পর তা হাতায় ভরে উঁচু-নিচু করে ৪ ঘণ্টা ধরে বার বার ঢালা না হলে এর আসল স্বাদই পাওয়া যাবে না!
গোলাপি চা তৈরি করতে হলে দক্ষ হাতের প্রয়োজন। এর পেছনেও আছে বৈজ্ঞানিক যুক্তি। হালকা অ্যাসিডিক এই চায়ে অম্লরোধে সাহায্য করে সোডিয়াম বাইকার্বোনেট (বেকিং সোডা)।
গোলাপি চায়ের রং কীভাবে পরিবর্তিত হয়? একটি আন্তর্জাতিক পত্রিকার প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, কাশ্মীরি চায়ে পলিফেনল অনেকটা ফেনোলসালফথালেইনের মতো কাজ করে।
যেটি ফেনল রেড নামেও পরিচিত। চায়ের রং বদলে হালকা বেগুনি হওয়ামাত্রই ওই রং ধরে রাখতে পাত্রে বরফ বা ঠান্ডা পানি ঢালা হয়। এরপর তাতে দুধ মেশালেই তৈরি গোলাপি চা। এভাবেই তৈরি করা হয় বিস্ময়কর গোলাপি চা।
সূত্র: আটলাস অবসিকিউর