চার মাস পেরিয়ে গেলেও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন থামার কোনও লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। বিশ্ব মোড়লদের শক্ত পদক্ষেপ না নেওয়ার সুযোগে উলটো যেন আরও আগ্রাসী হয়ে হয়ে উঠেছে দখলদার ইসরায়েলি সেনারা। টানা চারমাসের হামলায় বিধ্বস্ত উপত্যকা এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। এরই মধ্যে একটি ত্রাণ বিতরণ পয়েন্টে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর আরেকটি বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী, যেখানে তাদের নির্বিচার গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১০৪ জন ত্রাণপ্রার্থী।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) গাজা শহরের পশ্চিম নাবুলসিতে ত্রাণের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকা হাজারো ফিলিস্তিনির ওপর এ বর্বোরচিত হামলা চায় ইসরায়েলি সেনারা। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, হামলায় ১০৪ জন নিহত ছাড়াও আহত হয়েছেন ৭ শতাধিক ফিলিস্তিনি।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এএফপির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি একাধিক সূত্রও ত্রাণের অপেক্ষায় থাকা লোকজনের ভিড়ে তাদের সেনারা গুলি চালিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে। এই হামলার ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
তারা বলেছে, ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে কমপক্ষে ১০৪ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৭৬০ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় এক প্রত্যক্ষদর্শী এএফপিকে বলেছেন, বৃহস্পতিবার ভোরে গাজা শহরের পশ্চিম নাবুলসি গোলচত্বরে ত্রাণের ট্রাক এসে থামলে খাবারের জন্য মরিয়া হয়ে সেদিকে ছুটে জানান হাজার হাজার মানুষ। সেই সময় এই সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ত্রাণ-বোঝাই ট্রাকগুলো কিছু সেনা ট্যাংকের খুব কাছাকাছি চলে আসে। ওই সময় হাজার হাজার মানুষ ট্রাকের দিকে ছুটে আসেন। খাবারের জন্য তারা ট্রাকগুলোতে হামলে পড়েন। লোকজন ট্যাংকের খুব কাছে চলে আসায় ইসরায়েলি সেনারা ভিড় লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
হামলার বিষয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বক্তব্য, উত্তর গাজা উপত্যকায় ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে গাজার বাসিন্দারা ট্রাকগুলো ঘিরে ফেলে এবং ত্রাণ-সামগ্রী লুট করে।
পরে ইসরায়েলি একটি সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে বলেছে, লোকজন এমনভাবে ইসরায়েলি বাহিনীর কাছাকাছি এসেছিল, যে সেনাদের জন্য তা হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাই গুলি ছুড়ে হুমকি মোকাবিলা করা হয়েছে।
এফআর/অননিউজ