রাজমিস্ত্রী বাবার স্বল্প আয় ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে নিজের স্বপ্ন পূরণের পথে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের মেধাবী ছাত্র শেখ রেজাউল। এবার এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় ১লাখ ৪হাজার ৩৮৪ পরীক্ষার্থীর সাথে পরিক্ষা দিয়ে ১৫৬তম হয়েছেন সে। সুযোগ পেয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসক গড়ার বিদ্যাপিঠ ঢাকা মেডিকেল কলেজে।
রেজাউলের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর পৌরএলাকার নবীনগর গ্রামে। রেজাউল বাবা আল-আমিন শেখ পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী। মা হ্যাপি আক্তার গৃহিণী। তিন ভাই-বোনের মধ্যে রেজাউল সবার বড়। দরিদ্র পরিবারের রেজাউল ডাক্তার হবে! এই খবর শুনেই ওই এলাকাজুড়ে আনন্দ ও প্রশংসায় ভাসছে সে।
রেজাউল ছোটবেলা থেকেই পড়ালেখায় ছিলেন অধম্য মেধাবী। ২০২১ সালে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ ৫ অর্জন করেছেন। ২০২৩ সালে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় দিয়ে জিপিএ ৫ পায়। গত ১১ ফেব্রæয়ারি এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন সে। এক ঘণ্টার এ পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের এমসিকিউতে রেজাউলের স্কোর উঠে ৮৩ দশমিক ২৫ এবং মেরিট স্কোর ছিলো ২৮৩ দশমিক ২৫।
সাম্প্রতি কথা হয়েছে শেখ রেজাউলের। সে জানায়, ছোটবেলা থেকেই আমার ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন ছিলো। সে লক্ষ্যেই পড়ালেখা করেছি। বাবা-মা অনেক কষ্ট করে আমি ও আমার ছোট দুই বোনের পড়ালেখার খরচ চালান। সে সাথে আমার শিক্ষকরাও আমাকে অনেক সহায়তা করেছেন। তাদের অবদানে আজ আমি মেডিকেলে চান্স পেয়েছি।
রেজাউলের মা হ্যাপি আক্তার জানায়, তিনি সব সময় চাইতেন তার ছেলে একদিন ডাক্তার হবে। তারা নিজেরা কষ্ট করে চলাফেরা করেছেন, কিন্তু ছেলেকে কুমিল্লা শহরে হোস্টেলের রেখে পড়ালেখা করিয়েছিন।
কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রদর্শক বেলায়েত হোসেন জানায়, রেজাউল নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত থাকতেন। ঝড় বৃষ্টির সময়ও তাকে কখনো অনুপস্থিত থাকতে দেখিনি।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু জাফর খান বলেন, জানাগেছে এ বছর ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে প্রায় ৮৪ জন মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। রেজাউলসহ অন্যদের জন্য শুভকামনা ও অভিনন্দন রইল।
এফআর/অননিউজ