ফরিদপুরে দুইটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় দেশের স্থানে অভিযান চালিয়ে আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ। এসময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পুলিশ সুপার মো. মোর্শেদ আলম জানান, গ্রেফতারকৃতরা দিনে দিনমজুরের কাজ করেন আর রাতে হয়ে ওঠেন দুর্ধর্ষ ডাকাত। জানা যায়, গত ১৪ জুন রাতে ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের গোসাই ভাবুকদিয়া গ্রামের মৃত্যুঞ্জয় সরকারের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ১০ থেকে ১২ জনের ডাকাতদল বসতবাড়ির ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে সকলকে জিম্মি করে স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থ সহ মালামাল লুট করে পালিয়ে যায়।
এর আগে গত ১০ জুন রাতে সদর উপজেলার পরমানন্দপুর গ্রামে আক্তার মোল্যার বাড়িতে ১০ থেকে ১২ জনের ডাকাত দল ঘরে প্রবেশ করে একই কায়দায় জিম্মি করে মালামাল লুট করে নিয়ে পালিয়ে যায়। দুইটি ডাকাতির ঘটনায় কোতয়ালী থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দায়েরের পর পুলিশ ডাকাতদের আটকে অভিযান পরিচালনা শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামে। নারায়নগঞ্জ থেকে ৩জন, শরীয়তপুর থেকে ২জন ও ফরিদপুর থেকে একজনকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ছোড়া, লোহার রড, হাতুরি, সেলাই রেঞ্জ সহ বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। বুধবার (২৬ জুন) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এতথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম। তিনি জানান, আন্ত:জেলা ডাকাত দলের সর্দার নারায়নগঞ্জের কবির হোসেন সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, নারায়নগঞ্জ থেকে কবির হোসেন (৪৩), সাইদুল ইসলাম (৪১), হৃদয় (৩৫), শরীয়তপুর থেকে সাইফুল ইসলাম (২৭), ফরহাদ হোসেন (৩২) এবং ফরিদপুর থেকে আতিয়ার শেখ (৩৮) কে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সুপার জানান, তারা পিকআপ যোগে নারায়নগঞ্জ থেকে ফরিদপুরে এসে ডাকাতি করে আবার নারায়নগঞ্জে চলে যায়।
দীর্ঘদিন যাবত বসতবাড়ি ও মহাসড়কে ডাকাতি করে আসছে। তারা ডাকাতিতে আসা—যাওয়ার সময় পিকআপে এমনভাবে অবস্থান করে রাতে চেকপোস্টে আটকালে তারা নিজেদের মালামাল নামানো—ওঠানোর শ্রমিক হিসেবে পরিচয় দেয়। মোর্শেদ আলম আরো জানান, দেশের বিভিন্ন থানায় কবির হোসেনের নামে ৭টি, সাইদুল ইসলামের নামে ৯টি এবং হৃদয়ের নামে ৫টি ডাকাতি ও ডাকাতি চেষ্টার মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃতের আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে বলে জানান পুলিশ সুপার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন, কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাসানুজ্জামান প্রমুখ।