বাল্যবিয়ের ঘটনায় নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় দুই শিশুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেয়ায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা রাজিয়া ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন হাইকোর্টে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না বলেও অঙ্গীকার দিয়েছেন।
ওই সাজার ঘটনায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দাখিল করা লিখিত ব্যাখ্যায় ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া হয়। এর একটি কপি রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের মাধ্যমে হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে। সংশ্লিষ্ট আদালতে দায়িত্বরত ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ৫ আগস্ট বাল্যবিয়ের ঘটনায় দুই শিশুকে সাজা দেওয়ার বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা রাজিয়ার কাছে ব্যাখ্যা তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দেয়া ব্যাখ্যার এক কপি ২৬ আগস্টের মধ্যে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় দাখিল করতে বলা হয়েছিল। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে সেদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও বিপুল বাগমার। অন্যদিকে শিশুদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
আদালতের আদেশের বিষয়টি ওইদিন নিশ্চিত করে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির বলেছিলেন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা রাজিয়ার কাছে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ব্যাখ্যা চেয়েছেন। সেই ব্যাখ্যা হাইকোর্টে দাখিল করার নির্দেশনা চেয়েছিলাম। তখন আদালত এই আদেশ দেন।
প্রেমের সম্পর্কের জেরে পারিবারিকভাবে গত ১ আগস্ট নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার শ্রীরামপাশা গ্রামের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর (১৫ বছর) সঙ্গে সমবয়সী মহেশ্বরখিলা গ্রামের একজনের বিয়ের আয়োজন করা হয়। এই বিয়ের খবর পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুলতানা রাজিয়া নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পুলিশ পাঠিয়ে তাদের আটক করে নিজ কার্যালয়ে নিয়ে এক মাস করে সাজা দেন। এরপর তাদের গাজীপুর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
এর আগে বুধবার (৪ আগস্ট) বাল্যবিয়ের অভিযোগে নেত্রকোনায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের দেয়া সাজায় কারাগারে যাওয়া দুই শিশু মুক্তি পায়। আইনজীবীর চিঠি আমলে নিয়ে হাইকোর্ট শিশু দুটিকে মুক্তির নির্দেশ দেন।
দুই শিশুকে সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর খবর যুক্ত করে তাদের মুক্তি চেয়ে ই-মেইলে একটি চিঠি (পত্র) পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। এরপর এই আদেশ দেন হাইকোর্ট।
সাইফ/অননিউজ টুয়েন্টিফোর