দুদিনের ব্যবধানে হিলিতে পেয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০টাকা

হিলি প্রতিনিধি

সরবরাহ কমের অজুহাতে মাত্র দুদিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হিলিতে দেশীয় পেয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০টাকা করে। দুদিন আগেও প্রতি কেজি পেয়াজ ৩০টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ৪০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এদিকে পেয়াজের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নিন্ম আয়ের মানুষজন। ভারত থেকে পেয়াজ আমদানি শুরু হলে দাম কমে আসবে বলেও জানান তিনি।

হিলি বাজারে পেয়াজ কিনতে আসা সিদ্দিক হোসেন বলেন, ভারত থেকে পেয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও বেশ কিছুদিন ধরেই আমরা পেয়াজ ২৫ থেকে ৩০টাকা কেজি দরে খাচ্ছিলাম। ভারতীয় পেয়াজের চেয়ে স্বাদ ভালো ও পরিমানে কম লাগাই আমরা এই পেয়াজ ব্যবহার করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করছিলাম। কিন্তু আবারো দুদিনের ব্যবধানে মসলা জাতীয় পণ্য পেয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে দাম বেড়ে ৪০টাকায় দাড়িয়েছে। একেতো চাল,ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারনে আমাদের যেখানে ব্যায়ভার মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাতে করে নতুন করে মসলা জাতীয় পণ্য পেয়াজের দাম বাড়ায় আমাদের খুব সমস্যা হয়ে যাচ্ছে। পেয়াজের দাম যেন কমে আমরা সেই দাবী জানাচ্ছি।

পেয়াজ কিনতে আসা মিরাজুল ইসলাম বলেন, দুদিনের ব্যবধানে পেয়াজের দাম কেজিতে ১০টাকা বেড়ে গেলো। কিন্তু সেই তুলনায় রাতারাতি তো আমাদের আর বেতন বা আয় বাড়েনি। যে যার মতো পারছে দাম বাড়িয়ে চলছে কিন্তু এসব কিনতে আমাদের মতো নিন্ম আয়ের মানুষদের যে কি বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে তার প্রতি কেউ নজর দিচ্ছেনা। সামনে ঈদ আসছে এর উপর ভারত থেকে পেয়াজ আসা বন্ধ রয়েছে সেই সুযোগে ব্যবসায়ীরা পেয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। এতে করে আমাদের মতো মানুষজনের পেয়াজ কিনে খাওয়া অসম্ভব ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। তাই পেয়াজসহ অন্যান্য পণ্যের দাম যেন নিয়ন্ত্রনে থাকে সেই ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানাচ্ছি।

হিলি বাজারের পেয়াজ বিক্রেতা শাকিল খান বলেন, সরকার পেয়াজের পেয়াজের না দেওয়ায় বেশকিছুদিন ধরে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। এর পরেও বাজারে পর্যাপ্ত দেশীয় পেয়াজের মজুদ থাকায় দাম নাগালের মধ্যে ছিল। কিন্তু গতকয়েকদিন ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে যেসব এলাকায় পেয়াজ উৎপাদন বেশী হয় পাবনা মেহেরপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাত ও বন্যার কারনে পেয়াজের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এতে করে মোকামের পেয়াজের সররবাহ কমায় দাম বাড়তে শুরু করেছে। আগে যে ১হাজার ২শ টাকা প্রতি মন বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বেড়ে ১ হাজার ৬শ থেকে ৭শ টাকা মন বিক্রি হচ্ছে। যার কারনে বাড়তি দামে কিনতে হওয়ায় আমাদেরকে বাড়তি দামে পেয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে সামনে যেহেতু কুরবানীর ঈদ সেসময়ে পেয়াজের বাড়তি চাহীদা থাকে কিন্তু দেশীয় পেয়াজের সরবরাহ ইতোমধ্যেই কমতে শুরু করেছে যার কারনে যদি ভারত থেকে পেয়াজ আমদানি শুরু হয় তবে দাম কমে আসবে আর যদি না আসে দাম বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি।

হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন, বাজারে কেউ যেন কৃতিম সংকট তৈরি করে কোন পণ্যের মুল্যবৃদ্ধি করতে না পারে এজন্য আমরা নিয়মিতভাবে বাজার মনিটরিং করছি। প্রয়োজন অনুযায়ি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। কারো বিরুদ্ধে দাম বাড়ানোর এমন অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, দেশীয় কৃষকের উৎপাদিত পেয়াজের ন্যায্যমুল্য নিশ্চিত করতে ও পেয়াজের আমদানি নির্ভরতা কমাতে পেয়াজ চাষে কৃষকদের উদ্ভুদ্ধ করতে পেয়াজ আমদানির অনুমতি পত্র ইমপোর্ট পারমিট (আইপি) ইস্যু করা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এর ফলে ৫ মে থেকে হিলিসহ দেশের সবগুলো স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পেয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে।

আরো দেখুনঃ