কুমিল্লার দেবীদ্বারে গুনাইঘর গ্রাম। সেখানে ঐতিহ্যের নিদর্শন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে গুনাইঘর সাত গম্বুজ মসজিদ। নির্মাণ কৌশলে ভিন্নতা ও নান্দনিকতার জন্য দর্শক আকর্ষণ করছে মসজিদটি।
মসজিদটিতে রয়েছে চারটি মিনার ও সাতটি গম্বুজ । ২০০২ সালে শুরু হওয়া মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০০৫ সালে। স্থানীয় সাবেক সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সীর আর্থিক সহায়তায় মসজিদটি নির্মিত হয়। নির্মাণ শেষে এটি উদ্বোধন করেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডঃ খন্দকার মোশারফ হোসেন।
মসজিদটি নির্মাণ কাজে আড়াই বছর ২৮ জন মিস্ত্রি ও অর্ধশত শ্রমিক কাজ করেন। তখনকার সময় এর নির্মাণ ব্যয় দাঁড়ায় ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৪৮ ফুট, প্রস্থ ৩৬ ফুট। ৭ টি গুম্বুজ ও চার কোনায় রয়েছে চারটি মিনার, প্রতিটি মিনারের উচ্চতা ৮০ ফুট। মসজিদটি নির্মাণের সময় ইট,বালু,সিমেন্ট এর পাশাপাশি চিনামাটি ও স্টাইলস ব্যবহার করা হয়েছে। রয়েছে বিভিন্ন রংয়ের বৈদ্যুতিক বাতির আলোক সজ্জা।
আর্কষনীয় সাত গম্বুজ মসজিদের ভিতরে ও বাইরে নামাজ আদায় করতে পারেন কয়েক শত মুসুল্লি। মসজিদের গায়ে লিখা রয়েছে পবিত্র কুরআনেরা সূরা- আর রাহমান, আয়াতুল কুরসিরও বিভিন্ন দোয়া।
নতুন ও পুরাতন পদ্ধতির সংমিশ্রণে অসংখ্য ক্যালিও গ্রাফিতে আঁকা ব্যতিক্রমধর্মীর নির্মাণ শৈলির আবরণে নির্মিত এই মসজিদটি। এর সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করেছে ক্যালিওগ্রাফি ও নির্মান কৌশল। নির্মাণ শৈলীর দিক থেকে এ মসজিদটি সারা বাংলাদেশের হাতে গোনা কয়েকটি মসজিদের মধ্যে একটি। অসংখ্য ক্যালিও গ্রাফিতে আকা ব্যতিক্রম ধর্মী নির্মাণ শৈলী দেখা মিলে এখানে। বাংলাতে ৮ টি ক্যালিও গ্রাফি রয়েছে। আর আরবিতে লেখা রয়েছে মুসলিম ধর্মের চার কালেমা। কারুকাজ করা হয়েছে মোগল,তুর্কী ও পারস্যের সংমিশ্রণে। কারুকাজের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে ৩ শত ৫০ মন চিনামাটির টুকরো ও ২ শত ৫০ টি গ্লাস ব্যবহার করা হয়েছে। এ দৃস্টিনন্দন মসজিদটি দেখার জন্য ভীড় করেছে প্রচুর পর্যটক। মুরাদনগর থেকে মসজিদটি দেখতে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুল আলম বলেন, 'মসজিদটি নির্মাণে বেশ কিছু ব্যতিক্রমী ক্যালিগ্রাফি ব্যবহার করা হয়েছে। নির্মাণ শৈলিতেও রয়েছে মুনশিয়ানা। এই কারনে এটিকে আধুনিক কালের অন্যান্য স্থাপনা থেকো আলাদা করেছে'।
প্রভাষক ও গবেষক মমিনুল ইসলাম মোল্লা বলেন,'মসজিদটির বৈশিষ্ট্য হলো ক্যালিওগ্রাফি ও নির্মান কৌশল। ব্যতিক্রমী এই মসজিদটি দেখতে অনেকটা পারস্য ও গ্রীক নির্মাণ রীতিকে অনুসরন করা হয়েছে। নির্মাণ শৈলীর দিক থেকে এ মসজিদটি সারা বাংলাদেশের হাতে গোনা কয়েকটি মসজিদের মধ্যে একটি'।