নড়াইল সদর উপজেলার ১২বিছালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ইউনিয়নের ৮জন সদস্য। রবিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে নড়াইল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ ফখরুল হাসানের নিকট অভিযোগপত্র জমা দেন। এছাড়াও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দপ্তর বরাবর অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে।
অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন বিছালী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ পান্না বিশ^াস, ২নং ওয়ার্ডের সদস্য খন্দকার মঈন উ্্দ্িদন, ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য গাজী হাফিজুর রহমান, ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ আলী ইমাম সরদার, ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ জাহাঙ্গীর আলম,৯নং ওয়ার্ডের সদস্য সাধন কুমার বিশ^াস, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য হোসনে আরা বেগম ও রাজিয়া বেগম।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ১২নং বিছালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুক গত এক বছর ধরে নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িত। ইউনিয়নে বরাদ্দকৃত এলজিএসসপি, এডিবি, টিআর, কাবিটা, টিসিবি, ভিজিডি, বয়স্কভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা সহ উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব নিজের ইচ্ছামতো ও পছন্দের লোক দিয়ে বাস্তবায়ন করছেন। পরিষদের ৮ জন্য সদস্যকে ডাকা হয় না। মাসিক মিটিং বা রেজুলেশনও করা হয় না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে এসব সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করা হয়।
অভিযোগপত্রে আলো উল্লেখ করা হয়েছে, পরিষদের হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্সের ট্যাক আদায় করে নিজেই আত্মসাৎ করেছেন।
মেম্বর আলী ইমাম সরদার অভিযোগ করে বলেন, ‘ অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে অপমান অপদস্থ এমনকি হামলার শিকার হতে হয়। গত ৮ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে রুখালী গ্রামের মনোর খাল এলাকার আলমের চায়ের দোকানে আমাদের কয়েকজন মেম্বরের ওপর চেয়ারম্যানের সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা চালায়। আমাদের ওপর এলোপাথাড়িভাবে মারধর করে। আহত অবস্থায় আমরা নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করি। এ ঘটনায় ৮জনকে আসামী করে নড়াইল সদর থানায় মামলা দায়ের করেছি। বর্তমানে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। আবারও আমাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশংকা করছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন ফারুক বলেন, ‘ আমি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়নমূলক কাজ স্বচ্ছতার সাথে করে যাচ্ছি। কয়েকজন ইউপি সদস্য এসব কাজের ক্ষেতে অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলো। কিন্তু আমি কোন অনৈতিক সুবিধা দেইনাই। যার কারনে আমার বিরুদ্ধে কাল্পনিক ও ভিত্তিহীন অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন। অভিযোগে বিষয়গুলি তদন্ত করে আমার বিরুদ্ধে যদি কোন অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে আমি শাস্তি ভোগ করতে রাজি আছি। আর মেম্বররা আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা দেয়ার কে? জনগণ যদি কখনো আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা দেয় তাহলে পদত্যাগ করবো।’ ইউপি সদস্যদের ওপর হামলার বিষয়ে তিনি বলেন, মেম্বরদের ওপর হামলার বিষয়টি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় হতে পারে। হামলার সাথে আমার বা আমার লোকজনের কোন সম্পুক্ততা নেই।
নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্বরত উপ-পরিচালক মোঃ ফকরুল হাসান বলেন,‘ বিছালী ইউনিয়নের ৮জন সদস্য উপস্থিত হয়ে একটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে অভিযোগে সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। “