নড়াইলের সাবেক পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুন, লোহাগড়া থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ নাছির উদ্দিন, সাবেক ওসি (তদন্ত) হারান চন্দ্র পাল সহ পুলিশের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা, আওয়ামীলীগ সহ অঙ্গসংগঠনের ৩৪ জনের নামে আদালতে মামলা হয়েছে। লোহাগড়ায় বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিএনপি নেতা লোহাগড়া উপজেলার পারশালনগর গ্রামের মোঃ মনির হোসেনের ছেলে মোঃ শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) লোহাগড়া আমলী আদালতে মামলাটি দায়েরের পর মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল উদ্দিন মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআই যশোরকে তদন্তের নির্দেশ দেন। এই মামলায় আগামী ১৬ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। যার মামলা নং এমপি-১২২/২৪ (লোহাগড়া)।
এই মামলায় অন্যান্যদের মধ্যে লোহাগড়া থানার এসআই মোঃ মিজানুর রহমান, এসআই সবুর, লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মহিলা যুবলীগ নেত্রী ফারহানা ইয়াসমীন ইতি, লোহাগড়া পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি কামরুল হাসান, লোহাগড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সজিব মুসল্লী, লোহাগড়া পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈমুর রহমানসহ যুবলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দকে আসামী করা হয়েছে।
মামলার বিবরনে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিএনপির দলীয় কর্মসূচি পালন করতে লোহাগড়া আর্মি ক্যাম্পের সামনে বাদীসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত হয়ে মিছিলের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। এসময় আসামীরা মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। নড়াইলের সাবেক পুলিশ সুপার সাদিরা খাতুনের হুকুমে অন্যান্য আসামীরা বাদীসহ বিএনপির নেতাকর্মীদের শরীরের বিভিন্নস্থানে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে।
এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা ধাওয়া খেয়ে স্থানীয় কাজী সুলতানুজ্জামান সেলিমের বাড়ির মধ্যে আশ্রয় নিলে সেখানে আসামিরা প্রবেশ করে বাড়ির মধ্যে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীদের বিভিন্ন ধরণের প্রায় ২০টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে ব্যবহার অনুপযোগী করে ২০লক্ষ টাকার ক্ষতিসাধারণ করে। এসময় মুল্যবান জিনিসপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়।
বাদী মোঃ শরিফুল ইসলাম ফরিদপুর মেডিকেলে দীর্ঘদিন চিকিৎসাগ্রহন করে। আসামীরা যাওয়ার সময় বাদীসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের হুমকি দিয়ে বলে চাঁদা না দিলে তোদের দেশে থাকতে দেয়া হবে না। ঘটনার সময়ে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় এবং আসামীদের কয়েকজন পুলিশের প্রভাবশালী কর্মকর্তা হওয়ায় তখন লোহাগড়া থানা কর্তৃপক্ষ মামলা গ্রহন করেনি। বর্তমান সরকারের সময় দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকায় আদালতে মামলা করেছেন বলে বাদী তার আরজিতে উল্লেখ করেছেন।