নড়াইল সদরের সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের গোবরা এলাকায় উপজেলা নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার জের যেন থামছেই না। সর্বশেষ মঙ্গলবার (১১ জুন) এক মেয়ের শ্লীলতাহানীর চেষ্টা ও বুধবার ইমন শেখ নামে এক আসামির বাড়ি ভাংচুরের নাটক সাজিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রসঙ্গত,২ জুন একাধিক মামলার আসামি সিঙ্গাশোলপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক বহিষ্কৃত সভাপতি উজ্জ্বল শেখ ও
তার সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে গোবরা গ্রামের নিউটন গাজীর প্রাইভেটকার আগুনে পুড়িয়ে দেয়া, বাড়ি ভাংচুর-লুটপাট, তার বৃদ্ধ পিতা, স্ত্রী, সন্তানসহ ৫জনকে মারধরের
অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় সদর থানা পুলিশ ৪ জুন উজ্জ্বল শেখ ও তার সহযোগি আঃরাজ্জাককে গ্রেফতার করে। ৫ জুন (বুধবার) গোবরা বাসষ্টান্ডে উজ্জ্বল শেখের
চাঁদাবাজি, ভূমি ও দোকান দখল, বাড়ি ও দোকান ভাংচুর-লুটপাট এবং অত্যাচার নির্যাতনের শিকার ভূক্তভোগি স্থানীয় জনগন স্বতস্ফূর্তভাবে মিছিল, সমাবেশ ও
মানববন্ধন করে।
এদিকে, উজ্জ্বল শেখের মুক্তির দাবিতে রোববার ( ৯ জুন) গোবরা চৌরাস্তায় এবং সোমবার (১০ জুন) নড়াইলের আদালত চত্ত¡রে তার সমর্থকরা মানববন্ধন করে। অভিযোগ উঠেছে, উজ্জ্বলের সন্ত্রাসী বাহিনী জোরপূর্বক গোবরা পার্ব্বতী বিদ্যাপীঠ,গোবরা প্রগতি হাই স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থী এবং সংখ্যালঘু অধ্যুষিত লিশাখালী,নলদীর চর,গোবরাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ভয়ভীতি দিয়ে লোকজন এনে এ মানববন্ধন করানো হয়।
ভূক্তভোগি নিউটন গাজী বলেন, শুনেছি আমার বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (১১ জুন) ধর্ষণ চেষ্টা মামলা দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া আমি ও আমার লোকজন বলে বুধবার (১২ জুন) বেলা ১১টার দিকে আমার গাড়ী পোড়ানো, বাড়ি ভাংচুর-লুটপাট মামলার আসামি ইমন শেখের বাড়ি ভাংচুর করেছে। তিনি আরও বলেন, উজ্জ্বলের আপন ভাই জাকির শেখ, ভাগ্নে ইউপি মেম্বর মনির, রিফাত, ভাইপো নাসিম শেখ সংখ্যালঘু গ্রামের মানুষদের বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং গোবরা পার্ব্বতী বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা থেকে জোরপূর্বক নিয়ে মানববন্ধনে আসতে বাধ্য করে। গত দু’দিন আগে নড়াইল-২ আসনের এমপি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার কাছে উজ্জ্বলের বিভিন্ন অপকর্মের বিষয়ে অভিযোগ জানাতে ঢাকায় এসেছি। এখন আমাদের নামে হয়রাণীমূলক মামলা দেয়ার চেষ্টা চলছে। বিষয়টি সদর থানা পুলিশকে জানিয়েছি।
এদিকে বুধবার (১২ জুন) সকালে গাড়ী পোড়ানো, বাড়ি ভাংচুর ও মারপিটের মামলায় উজ্জ্বল শেখের দুই দিনের রিমান্ড শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস.আই মেহেদী হাসান বলেন, উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে সদর থানায় ৮টি সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। তার দুই দিনের রিমান্ড শেষ হয়েছে। তবে সে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিষয়ে মুখ খোলেনি। এ মামলায় এ পর্যন্ত উজ্জ্বল শেখ, তার সহযোগি আঃ রাজ্জাক, ইমন শেখ ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইমন শেখের বাড়ি ভাংচুরের বিষয়টি মিথ্যা। তবে শ্লীলতাহানীর বিষয়টি ওসি স্যার বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি মোঃ সাইফুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। জানা গেছে, ২১ মে অনুষ্ঠিত সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীকের বিজয়ী প্রার্থী জেলা আ’লীগ নেতা আজিজুর রহমান ভূঁইয়ার পক্ষে কাজ করায় নিউটন গাজীর ওপর এ হামলার ঘটনা ঘটে। উজ্জ্বল শেখ পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তোফায়েল মাহমুদের পক্ষে কাজ করেন। এর আগে উজ্জ্বল শেখের বিরুদ্ধে এলাকায় চাঁদাবাজি, দোকান ও জমি দখল,বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট,সরকারি গাছকাটাসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। ২০২১ সালে ঙ্গাশোলপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা আশিকুর রহমান ও তার আতীয় ১০টি পরিবারকে উজ্জ্বল চেয়ারম্যান একঘোরে করে রেখেছে। এখনও তারা উজ্জ্বলের ভয়ে বাড়ি ছাড়া।
একে/অননিউজ২৪
প্রধান সম্পাদক: হুমায়ুন কবির রনি
মোবাইল: ০১৭১৬-৫৩০৫১৪
ইমেইল: onnews24@gmail.com
www.onnews24.com