নড়াইলে খালে বিষ দিয়ে দেশি মাছ ধ্বংসের প্রতিবাদে ও দোষীদের গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন বিক্ষোভ
নড়াইল প্রতিনিধি

নড়াইল সদর উপজেলার দুর্গাপুর, ডুমুরতলা, নয়নপুর, চাঁদপুর, বিষ্ণুপুর ও বাহিরডাঙ্গা এলাকার পাইতেল বিলের খালসহ উন্মুক্ত জলাশয়ে বিষ দিয়ে দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধ্বংসের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে নয়নপুর বটতলায় ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর আয়োজনে এসব কর্মসূচী পালিত হয়।
আধাঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন নড়াইল পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান আলী খান, নড়াইল পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি জহুরুল ইসলাম, পৌর যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি আজিজুর রহমান, শাহাবাদ ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার মুকুল বিশ^াস, কৃষক লোকনাথ বিশ^াস, নয়নপুরের মিজানুর রহমান, প্রদে্যুৎ বিশ^াস, দুর্গাপুরের সুবোধ লস্করসহ অনেকে।
বক্তারা বলেন, অন্তত ১০ গ্রামের কৃষক, মৎস্যজীবীসহ সাধারণ মানুষ পাতিয়ার বিলের খালের ওপর নির্ভরশীল। এই খালে সারাবছর পানি থাকে। এটি দেশি মাছের অভয়াশ্রম বলা হয়। অথচ আজিজুর রহমান নামে এক ব্যক্তি নিজের স্বার্থে পাইতেল বিলের খালে বিষ প্রয়োগ করে সব দেশি মাছ ধ্বংস করে দিয়েছে। গত ৫ ডিসেম্বর পাইতেল বিলের খালে বিষ প্রয়োগ করার সব দেশি মাছ মরে গেছে।

বিষ প্রয়োগের পর থেকে বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) পর্যন্ত এই খালসহ উন্মুক্ত জলাশয়ের পুটি, সরপুটি, শোল, কৈ, টেংরা, মাগুর, টাকি, রয়না ছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ মরে ভেসে উঠেছে। আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে আজিজুর রহমান প্রায় ১৭ বছর ধরে এই খালে অন্য কাউকে মাছ ধরতে দেয় না।
নিজেই খালে একাধিক বাধ বা পাটা তৈরি করে মাছ ধরে বিক্রি করে দেন। এলাকাবাসী এ ঘটনার প্রতিবাদ করায় এবার খালে বিষ দিয়ে সব মাছ মেরে ফেলেছে। গত ৫ ডিসেম্বর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত খালে সব মরা মাছ ভেসে উঠছে। এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা আজিজুর রহমানের গ্রেফতারসহ বিচার দাবি করছি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে।
তবে, অভিযুক্ত আজিজুর রহমান পলাতক থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে সদর থানা পুলিশ ও মৎস্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পাইতেল খাল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় খালে বাধ দিয়ে তৈরি করা পাটা ধ্বংস করে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে নড়াইল সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আবু রায়হান বলেন, সরকারি আইনে খাল বা উন্মুক্ত জলাশয়ে পাটা তৈরি করে মাছ শিকার করা অবৈধ। তাই এগুলো অপসারণ করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। এছাড়া খালে বিষ প্রয়োগে দেশি মাছ ধ্বংস করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।