নড়াইলে দুষ্কৃতকারীদের আগুনে কৃষক নাজমুল মোল্যার সোনালী স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। একইভাবে হতদরিদ্র বর্গাচাষী ইমরান শেখের স্বপ্ন জমিতেই ছাই হয়ে গেছে। ৩দিনের ব্যবধানে দুজন কৃষকের জমির ধান পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় চাষীদের মাঝে আতঙ্ক বিজরা করছে। ঘটনা দুটি ঘটেছে নড়াইল সদর উপজেলার ভদ্রবিলা বিলে।
জানাগেছে, ভদ্রবিলা গ্রামের কৃষক নাজমুল মোল্যার ৩৯ শতক জমির ধান কেটে জমিতে স্তুপ করে রেখে আসে। সোমবার (১মে) সকালে কর্তনকৃত ধান বাড়িতে আনার উদ্দেশ্যে মাঠে জমিতে যান। গিয়ে দেখতে পান সব ধান পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। তবে কি কারনে কে বা কারা পুড়িয়েছে তা বলতে পারেননি।
নাজমুল মোল্যা বলেন,‘ আমি ৩৯ শতক জমিতে ধান লাগিয়েছিলাম। জমি চাষ, চারা রোপন, সার কীটনাশক প্রয়োগজ, শ্রমিক খরচসহ অনেক টাকা খরচ হয়েছে। পাকা ধান কেটে দুটি স্থানে স্তুপ করে রাখা হয়েছে। এই ধান ঘরে তুলে আমাদের ভাতের ব্যবস্থা হবে সেই আশায় ছিলাম। কিন্তু কেন আমার ধান এভাবে পুড়িয়ে দেয়া হলো জানিনা। এলাকায় কারও সাথে কোন শত্রæতাও নেই। প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, ঘটনার সাথে জড়িতদের খুজে বের করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।’
এদিকে গত বৃহস্প্রতিবার একই গ্রামের হতদরিদ্র বর্গাচাষী ইমরান হোসেনের ১৫ শতক জমির কাটা ধান আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। কৃষক ইমরান শেখ বলেন,‘ আমি একজন ভ্যান চালক। ১৫ শতক জমি বর্গা করেছি। ধার দেনা করে ধান লাগিয়েছিলাম। পাকা ধান কেটে জমিতে শুকানো হয়। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার রাতে কে বা কারা পুড়িয়ে দিয়েছে। ধান লাগাতে গিয়ে ধার দেনা করেছি। এখন সংসার কিভাবে চালাবো আল্লাহপাকই ভালো জানেন।’
ভদ্রবিলা গ্রামের বাসিন্দা কৃষখ সেলিম হোসেন জানান, এলাকায় কোন দলাদলি নেই। তবে একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে নিয়ে সন্দেহ হয়। অনেকেই ধারণা করছেন, ওই মাদক সেবী এ ঘটনা ঘটাতে পারে। দুটি জমির ধান পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় এলাকার কৃষকরা চরম আতঙ্কে রয়েছে। রাতের বেলায় ধান পাহারা দেয়া শুরু করেছে। পুলিশ প্রশাসন যদি এ ব্যাপারে দ্রæত ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে আরো ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নড়াইল সদর থানার ওসি ওবায়দুর রহমান জানান, খবর শোনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের সনাক্ত করে আটকের জোর চেষ্টা চলছে।’