নড়াইলে বিএনপি নেতার চাপে আওয়ামীলীগ নেতাদের নামে দায়েরকৃত এজাহার প্রত্যাহারের অভিযোগ
নড়াইল প্রতিনিধি।।
নড়াইল এক ইউনিয়ন বিএনপি নেতার চাপের মুখে আওয়ামীলীগ নেতাদের নামে দায়েরকৃত এজাহার প্রত্যাহার করতে হয়েছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত শফিকুল ইসলামের। মামলাটি তুলে নিয়ে তিনি মানষিকভাবে অস্বস্তিতে ভুগছেন। বিষয়টি জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দকে জানিয়েও কোন ফল হয়নি। এখন তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন জানগেছে, নড়াইল সদর উপজেলার ভদ্রবিলা ইউনিয়নের পলইডাঙ্গা গ্রামের মৃত আশরাফ আলীর ছেলে শ্রমিক নেতা শফিকুল ইসলাম গত ৫ আগষ্ট বেলা ১১টার দিকে নড়াইল শেখ রাসেল সেতুর ওপর সংঘর্ষকালে হাতে গুলিবিদ্ধ হন। এসময় তাকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা দেন। দেড় মাস অতিবাহিত হলেও তিনি এখনও পুরোপুরি সুস্থ্য হয়ে উঠতে পারেনি। আংশিকভাবে সুস্থ্য হয়ে শফিকুল ইসলাম গত ৫ অক্টোবর ২৪ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাতনামা ৩০০/৪০০ জনকে আসামী করে নড়াইল সদর থানায় একটি এজাহার জমা দেন। এই এজাহারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,
আওয়ামীলীগের সাধালণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, নড়াইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, মাশরাফির পিতা গোলাম মোর্ত্তজা স্বপন,জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক স্বপ্নীল সিকদার নীল সহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়।
২৩ অক্টোবর দুপুরে মামলার বাদী শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, ভদ্রবিলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাজী রকিবুদ্দীন সেন্টুর চাপের কারনে মামলা তুলে নিতে বাধ্য হয়েছেন। তাকে জোরপূর্বক কয়েকজন ধরে নিয়ে নড়াইল থানায় নিয়ে গিয়ে মামলাটি প্রত্যাহার করিয়েছেন। বিষয়টি তিনি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলামকে জানিয়েও কোন ফল হয়নি। কি কারনে প্রত্যাহারের চাপ দিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল ইসলাম বলেন,‘ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাজী সেন্টুর সাথে জেলা আওয়ামীলীগের অনেক নেতাদের সাথে ভালো সম্পর্ক। তাঁর সম্পর্কের কয়েকজনকে আসামী করায় মামলাটি জোরপূর্বক আমাকে দিয়ে প্রত্যাহার করেয়েছে। বিষয়মি আমি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের জানানোর চেষ্টা করছি।’
এ ব্যাপারে ভদ্রবিলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কাজী রকিব উদ্দিন সেন্টু বলেন, ‘শফিকুল ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গিয়ে আহত হয়েছে সত্য। কিন্তু সে আমাকে না জানিয়ে তার ইচ্ছামতো আওয়ামীলীগ নেতাদের নামে মামলা করেছে। শফিকুল ইউনিয়ন বিএনপির কোন পদে নেই। তবে সে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। সে হিসেবে হয়তো সে শ্রমিক দলের সাথে যুক্ত থাকতে পারে। তবে তাকে চাপ প্রয়োগ দিয়ে মামলা তোলা হয়েছে এ অভিযোগ সঠিক নয়।’
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ গত ৫ আগষ্ট নড়াইল শেখ রাসেল সেতুর ওপর ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় আগেই একটি মামলা হয়েছে।
একটি স্পটে হামলার ঘটনায় সাধারণত একটি মামলা হয়। রাসেল সেতুর ওপর হামলার ঘটনায় আগেই একটি মামলা হয়েছে। সে কারনে হয়তো সে মামলাটি প্রত্যাহার করে নিতে পারে।
নড়াইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘ ভদ্রবিলা ইউনিয়নের পলইডাঙ্গা গ্রামের শফিকুল ইসলাম একটি এজাহার জমা দিয়েছিলো। যেহেতু একই ঘটনায় আগে একটি মামলা রুজু হয়েছে। সে কারনে ওই অভিযোগপত্রের নতুন আসামীদেরকে পুরনো মামলার সাথে সংযুক্ত করার সুযোগ ছিলো। কিন্তু কয়েকদিন পরেই আবেদনকারী এজাহারটি প্রত্যাহার করে নিয়ে যায়।
একে/অননিউজ24