নড়াইলে ভাষা সৈনিক অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষিক রিজিয়া খাতুন ইন্তেকাল করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারী) সকাল ৯টায় শহরের মহিষখোলাস্থ নিজ বাসায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮বছর। রিজিয়া খাতুন কয়েক বছর যাবৎ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। তিনি কমরেড আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী। মৃত্যুকালে তিন ছেলে, দুই মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারী) বাদ আসর নড়াইল কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে জানাজার নামায অনুষ্ঠিত হয়। জানাযার আগে রিজিয়া খাতুনের কফিনে নড়াইল জেলা প্রশাসন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, চিত্রা থিয়েটার, যুগান্তর সাংস্কতিক সংসদ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন শ্রদ্ধা জানান।
এ সময় নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) এম এম আরাফাত হোসেন, নড়াইল সরকারী ভিক্টোরিয়া কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর রবিউল ইসলাম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নড়াইলের সভাপতি মলয় কুন্ডু, সাধারণ সম্পাদক শরফুল আলম লিটু, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলামসহ বিভিন্ন গণ্যমাণ্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। জানাজার নামায শেষে তাঁকে নড়াইল শহরের ডুমুরতলায় পিতা কমরেড নূরজালালের কবরের পাশে চির নিদ্রায় শায়িত করা হয়।
তেভাগা আন্দোলনের অন্যতম নেতা কমরেড নুর জালালের কন্যা রিজিয়া খাতুন ১৯৩৬ সালের ১৫ জানুযারী নড়াইল পৌরসভার ডুমুরতলায় জন্মগ্রহন করেন। ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি ঢাকায় গুলিবর্ষণের খবরের পর যেসব ছাত্রী রাস্তায় নেমে এসেছিলেন তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। এ সময়ে তিনি নড়াইল দিলরুবা গার্লস হাই স্কুলে ৭ম শ্রেনিতে পড়াকালীন সময়ে মাতৃভাষার পক্ষে মিছিল-মিটিং করে ছাত্রীদের সংগঠিত করেছেন। ২১ ফেব্রæয়ারীর পর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রিজিয়া খাতুন নড়াইল পৌর পার্কের কালিদাস ট্যাঙ্কের পাড়ে ইট দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পন করেন।
ভাষা আন্দোলনে তাঁর অবদান স্থানীয়ভাবে স্বীকৃত হলেও রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত পাননি তিনি। এলাকার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপন, প্রগতিশীল আন্দোলন, নুরজালাল পাঠাগারসহ নানা প্রগতিশীল কাজে জড়িত ছিলেন এই মহিয়সী নারী। জীবিত অবস্থায় তাঁর শেষ ইচ্ছা ছিল ভাষাসৈনিক হিসাবে সরকারের স্বীকৃতি। ছবি সংযুক্ত।
এফআর/অননিউজ