নড়াইল শহরে ভূমিদস্যু হিসেবে খ্যাত সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের মাষ্টাররোলে কর্মরত অফিস সহায়ক মোহাম্মদ উল্লাহ কর্তৃক নড়াইল পৌরসভার ধোপাখোলায় বাড়ি ভাংচুর, জবরদখলের প্রতিবাদ ও তার শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভূক্তভোগির পরিবার সহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ। মঙ্গলবার (১১ জুন) দুপুরে নড়াইল আদালত সড়কে মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী পরিবারটি নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের হুইপ মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রায় আধাঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন ভূমিদস্যু মোহাম্মদ উল্লাহর জবর-দখলের শিকার পৌরসভার ধোপাখোলা এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মান্নানের স্ত্রী নাছিমা
বেগম ও তার ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন।
জানা গেছে, ২০০৮ সালে আব্দুল মান্নান ধোপাখোলায় ১৫ শতাংশ জমি কিনে নামপত্তন ও নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করে আসছেন। গত ৫ বছর আগে জমিতে একতলা পাকা ঘর করে বসবাস শুরু করেন। গত অক্টোবর মাসে তিনি অসুস্থ হয়ে সপরিবারে ঢাকায় ছিলেন। এই সুযোগে মোহাম্মদ উল্লাহ কয়েক সন্ত্রাসী নিয়ে ওই বাড়িটি ভেঙ্গে ফেলে।
নাসিমা বেগমের ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, যখন মোহাম্মদ উল্লাহসহ কয়েক সন্ত্রাসী বাড়ি ভাংচুর করে তখন আমরা এর প্রতিবাদ করলে তারা বলেছিল আমরা
মাশরাফির লোক। আমরা বিভিন্ন সময় থানায় অভিযোগ জানিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। গত ২৫মে বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট ও গাছ কাটার ঘটনায় সিআইডতে সিআর
মামলা হয়েছে।
এ বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে এমপি মাশরাফীর ব্যক্তিগত সহকারী মোঃ জাহিদুর রহমানের চোখে পড়লে তিনি ওই রাতেই মাশরাফির নাম
ভাঙিয়ে বাড়ি ভাংচুর ও গাছ কাটার ঘটনায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, সম্প্রতি শহরের ধোপাখোলায় নাসিমা বেগম নামে এক
মহিলার বাড়ি ভাংচুর ও গাছ কাটার ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয় ও অপরাধীদের সম্পর্কে এমপি অবগত নন। যারা তাঁর নাম ভাঙ্গিয়ে এসব অপকর্ম করছে তাদের আইনের আওতায় আনতে বলা হয়েছে। এদিকে এ অভিযোগের পরপরই মোহাম্মদ উল্লাহকে সদর থানা পুলিশ ১৫১ ধারায় গ্রেফতার করলেও ছুটির দিনেই আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে আসে।
আব্দুল মান্নানের স্ত্রী নাসিমা বেগম বলেন, জমির ওপর আদালতের স্থিতিবস্থা থাকলেও ভূমিদস্যুরা তার বাড়ির ৪টি কক্ষ, একটি রান্না ঘর ও একটি গোয়াল ঘর ভেঙ্গে ফেলেছে। প্রায় ৬লাখ টাকার মালামাল, জানালা ও দরজা লুট করে নিয়ে গেছে। বাড়ির প্রায় ১০টি গাছপালা কেটে ফেলেছে। আমরা এই ভূমিদস্যূর উপযুক্ত বিচার চাই।
এ বিষয়ে নড়াইল পৌর মেয়র আঞ্জমান আরা বলেন, নাসিমা বেগমের বাড়ি ভাংচুরের বিষয়টি জানা ছিল না। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে নিউজ হলে বিষয়টি জানতে
পেরে নাসিমার বাড়িতে যাই। তার মাথাগোজার ঠাঁই হিসেবে ওই জমির ওপর একটি টিনের ঘর তৈরি করে দেয়া হবে এবং চাল, ডাল,তেল,লবনসহ নিত্য প্রয়োজনীয়
জিনিসপত্রের ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া নাসিমার পরিবার যাতে সঠিক বিচায় পায় সেজন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবো।
মামলার বিষয়ে নড়াইল সিআইডির ইন্মপেক্টর মলয় কুমার সাহা বলেন, এটি একটি সিআর মামলা। সিআইডি মামলাটির তদন্ত শুরু করেছে। দ্রæতই তদন্ত রিপোর্ট দেওয়া
হবে। তিনি কাওকে কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান।
একে/অননিউজ24