অধ্যক্ষ দীন মোহাম্মদ খান তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের প্রেক্ষিতে আজ একটি সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জবাব দিয়েছেন। সম্মেলনে তিনি সাম্প্রতিক সময়ে গাজী টিভি, দৈনিক যুগান্তর ও মানব জমিন পত্রিকায় প্রকাশিত তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, ০৫ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তার সহকর্মীরা রাজনৈতিক, সামাজিক এবং ব্যক্তিগত বিষয়ে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেছেন। বিশেষ করে তাকে 'আওয়ামী সন্ত্রাসী' হিসেবে অভিহিত করার বিষয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি স্পষ্টভাবে জানান, তিনি কখনও আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না এবং কোন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতা ছিলেন তা প্রমাণ করার জন্য আহ্বান জানান।
অধ্যক্ষ দীন মোহাম্মদ অভিযোগের বিষয়ে বলেন, তার বিরুদ্ধে আনা মিথ্যা খবরগুলো বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা মাত্র। তিনি স্পষ্ট করেন যে, গাজী টিভিতে তার চারজন স্ত্রী থাকার কথা উল্লেখ করা হলেও, সংবাদ সম্মেলনে তিনজনের কথা বলা হয়েছে—যা তার ভাষায় "রাতারাতি একজন স্ত্রীকে হাওয়া করে দেওয়া"র মতো ঘটনা।
তিনি তার মাস্টার্সের সনদকে জাল বলার অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করে সনদ যাচাইয়ের জন্য কপিও উপস্থাপন করেছেন। এছাড়া, অর্থনৈতিক আয়-ব্যয়ের সঠিক হিসাবও উপস্থাপন করে তিনি প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে জাতিকে অবহিত করেছেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রকৃত আয় ৫ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা এবং ব্যয় ৫ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা বলে জানান তিনি। অবশিষ্ট ১৫ লক্ষ টাকা ব্যাংকে গচ্ছিত আছে বলেও উল্লেখ করেন।
অধ্যক্ষ আরও বলেন, তার সহকর্মীরা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের ওপর চরম প্রশাসনিক চাপ ও প্রভাব বিস্তার করে এবং তাদের মোবাইল ফোন জিম্মায় রেখে তার সাথে যোগাযোগের সুযোগ বন্ধ করে দেয়।
তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে যেসব অনিয়মের অভিযোগ আনা হয়েছে সেগুলো কোন সরকারি তদন্ত সংস্থা দ্বারা যাচাই করা হয়নি। অভিযোগকারীদের আসল উদ্দেশ্য ছিল কাকলি স্কুল অ্যান্ড কলেজকে ধ্বংস করে নিজেদের স্বার্থে নেওয়া। প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের কোনো অস্তিত্ব ছিল না বলে তিনি স্পষ্ট করেন।
অধ্যক্ষ দীন মোহাম্মদ খান বলেন, প্রতিষ্ঠানটির উত্থান এবং আধুনিকায়নের পেছনে তার এবং পরিচালনা কমিটির বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল। তিনি প্রতিষ্ঠানের জমি সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়েও বিস্তারিত জানান, যেখানে তিনি প্রতিষ্ঠানের অর্থে কেনা জমি পুনরুদ্ধার করে প্রতিষ্ঠানের নামে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের স্বার্থে তিনি বলেন, শিক্ষকদের সম্মতি নিয়ে গভর্নিং বডির সিদ্ধান্তের মাধ্যমে শিক্ষকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে ঋণ নিয়ে বর্তমান ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। তিনি উল্লেখ করেন যে, এসব উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রতিষ্ঠান ২২ লক্ষ টাকা পৌরকরও পরিশোধ করেছে।
অধ্যক্ষ দীন মোহাম্মদ খান দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগই রাজনৈতিক প্রভাব ও স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি অবিলম্বে সঠিক তদন্তের দাবি জানান এবং প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান।
একে/অননিউজ24