নড়াইলে হাত-পা বাধা মরদেহ উদ্ধার

নড়াইল প্রতিনিধি

আইসক্রীম বিক্রেতা পিতা স¤প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়ে আছে বিছানায়। আয় রোজগারের পথ বন্ধ। বড় ভাই কিছুদিন আগে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। এখনও বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারেনি। অসুস্থ পিতার ওষুধ কেনা, মা সহ পরিবারের সদস্যদের মুখে দুবেলা দুমুঠো খাবার তুলে দেয়ার আশায় এবং সংসারের হাল ধরতে ১২ বছর বয়সী কিশোর সুমন তার পিতার ভ্যান নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছিলো। কিন্তু আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। নিখোঁজের চারদিন পর তার হাত-পা বাধা লাশ মিললো একটি খালে। রবিববার (২৪ আগস্ট) বিকাল ৫টার দিকে লোহাগড়া উপজেলার কামঠানা এলাকার বেড়িবাঁধ সংলগ্ন একটি খাল থেকে সুমনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সুমন মোল্যা উপজেলার লাহুড়িয়া গ্রামের ডহরপাড়ার আইসক্রীম বিক্রেতা বিল্লাল মোল্যার ছেলে।

নিহতের পরিবার ও পুলিশ ও সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ আগষ্ট সুমন তার পিতার ভ্যানটি নিয়ে রোজগারের জন্য রাস্তায়য় বের হয়। এরপর আর সে বাড়িতে ফেরেনি। নিখোঁজের একদিন পর কাশিয়ানী এলাকায় তার ভ্যান পাওয়া গেলেও সুমনের খোঁজ মেলেনি।
সুমনের প্রতিবেশ মোঃ পারভেজ আহম্মেদ মিঠুন জানান, সুমনের ভ্যানটি কাশিয়ানী এলাকায় পড়েছিলো। ভ্যানের পিছনে ভ্যান তৈরির কারিগরের মোবাইল নম্বর দেয়া ছিলো। স্থানীয়রা ভ্যানের বডিতে লেখা নম্বরে ফোন দিলে ভ্যানের কারিগর (মিস্ত্রি) ফোন রিসিভ করেন। পরে সুমনদের বাড়িতে ফোন দিয়ে ভ্যানের বিষয়টি জানান। পরে ভ্যানটি কাশিয়ানী এলাকা থেকে নিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু সুমনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এদিকে সন্তান নিখোঁজের ঘটনায় সুমনের মা সামেলা বেগম শুক্রবার (২২ আগষ্ট) লোহাগড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন। সাধারণ ডায়েরি নং-১০৫৮।
পুলিশ সুত্রে আরো জানাগেছে,রবিবার বিকালে কামঠানা গ্রামের বেলায়েত হোসেন নামে এক কৃষক তার হারানো পাটের জাগ খুঁজতে গিয়ে খালের কিনারায় একটি লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এসময় স্থানীয় লোকজনকে জানানোর পর সেখানো লোকজন জড়ো হয়ে যায়। পরে বিষয়টি লোহাগড়া থানা পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। মরদেহ উদ্ধারের কিছুক্ষণ পর সুমনের মা সহ আত্মীয়-স্বজনরা ঘটনাস্থলে মরদেহটি সনাক্ত করেন। পুলিশ সহ তার পরিবারের সদস্যরা ধারণা করছে, ছিনতাইকারীরা সুমনকে হত্যা করে ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিলো। কোন কারনে হয়তো ভ্যানটি ফেলে গেছে।

এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মরদেহটি লাশ উদ্ধার করে। মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের সনাক্ত ও আটকের জন্য পুলিশ ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে।

আরো দেখুনঃ