বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণের অভিযোগে নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু, জেলা আ’লীগের সহ- সভাপতি ও নড়াইল পৌরসভার সাবেক মেযর আঞ্জুমান আরা, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হাসান কায়েস, জেলা যুবলীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট গাউসুল আজম মাসুম, সাধারণ সম্পাদক খোকন কুমার সাহা, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাঈম ভ‚ইয়া, সাধারণ সম্পাদক স্বপ্নীল আকাশ নীল সহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের ৬৯ নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। এই মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরো ৪০০-৫০০ জন।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নড়াইল সদর আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নড়াইল সদর উপজেলার বাঁশগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান। বিজ্ঞ আদালতের বিচারক মোঃ জুয়েল রানা নড়াইল সদর থানার ওসিকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করার আদেশ দিয়েছেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৪ আগস্ট দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে মিছিল নিয়ে শহর অভিমুখে আসছিল। রাসেল সেতুর কাছাকাছি পৌঁছাতেই জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলুর হুকুমে আসামি অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হাসান কায়েস শর্টগান দিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালায়। এ সময় শর্টগানের গুলিতে আন্দোলনকারি বাদির ভাইপো কলেজ ছাত্র সোহান বিশ^াসসহ ৪ জনের বুক সহ শরীরের বিভিন্নস্থানে লেগে মারাত্মক জখম হয়। এছাড়া আসামীরা আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আরও কয়েকজনকে আহত করে। সোহান এখনো ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ বিষয়ে সদর থানার ওসি মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মামলার কপি এখনো আমাদের হাতে আসেনি। আসলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
জানা গেছে, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে এ পর্যন্ত আ’লীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৫টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় নড়াইল-২ আসনের সাবেক এমপি ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, নড়াইল-০১ আসনের সাবেক এমপি আ’লীগ নেতা কবিরুল হক মুক্তি, জেলা আ’লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ৪শ ২৮ জন আসামি হয়েছেন। অজ্ঞাত আসামির সংখ্যা ১ হাজারের বেশী। তবে সদর, লোহাগড়া, কালিয়া ও নড়াগাতি থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।