নড়াইল প্রতিনিধি।।
নড়াইল পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে জেলা পরিষদের বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিকার চেয়ে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে পৌর পরিষদ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশফাকুল হক চৌধুরীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন। এ সময় মেয়রের পক্ষে স্মারকলিপি প্রদান করেন কাউন্সিলর রেজাউল বিশ্বাস, কাউন্সিলর ও পৌর পরিষদ কর্তৃপক্ষ। সড়ক দূর্ঘটনায় নড়াইল পৌর মেয়র আজ্ঞুমান আরা অসুস্থ থাকায় তিনি উপস্থিত হতে পারেননি।
নড়াইল পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৩৯ সালে তৎকালীন যশোর ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড ই.এস.টি (ঊঝঞ)/ জেড.বি.জে(তইঔ) /৩৯/২৬১,উঃ,১১.৫.৩৯নং পত্রের মাধ্যমে তৎকালীন ইউনিয়ন বোডর্কে (বর্তমানে পৌরসভা) নড়াইল শহরের ৭৪নং মহিষখোলা মৌজার এস.এ ২নং খতিয়ানভূক্ত ‘ক’,‘খ’ ও ‘গ’ তপশিলে বর্ণিত প্রায় ৪ একর ২১শতাংশ জমির মালিকানা প্রদান করেন। এরপর থেকে জমির সমস্ত উন্নয়নমূলক কাজ, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জায়গা ও জমি লিজ প্রদান, পৌরসভার একাধিক মার্কেট নির্মাণ এবং বাৎসরিক ইজারা প্রদান করে আসছে। এতে পৌরসভার নির্দিষ্ট আয়ও হচ্ছে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভূমি অফিসের কর পরিশোধ রয়েছে। ভূমি জরিপ ও আরএস রেকর্ডও পৌরসভার নামে। এ ধারাবাহিকতায় নড়াইল ইউনিয়ন বোর্ড বর্তমানে নড়াইল পৌরসভা স্বত্ত¡বান হয়ে উক্ত জমিতে বিভিন্ন ধরণের উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছে। গত প্রায় ৬ মাস আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ওয়াল্ড ব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় ১৮ কোটি টাকার নড়াইল শহরের কালিদাস ট্যাংক পুকুর বিউটিফিকেশন,মৌসুমী সুপার মার্কেট পূনঃনির্মাণ, শহর বাজারের চান্দি আধুনিকীকরণ প্রকল্প,অত্যাধুনিক কশাইখানা নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া নড়াইল চৌরাস্তা-শিল্পকলা-জজকোর্ট হয়ে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা প্রশস্তকরণ ও ড্রেন নির্মাণ এবং সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন। কিন্তু জেলা পরিষদ এসব জায়গার মালিকানা দাবি করে পৌরসভার এসব উন্নয়ন প্রকল্পে বাঁধা প্রদান কর। সম্প্রতি জেলা পরিষদ আদালতকে ভুল বুঝিয়ে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে পৌরসভার ৪ একর ২১ শতাংশ জমি দাবি করে আইনের আশ্রয় নিয়েছে। গত ২ নভেম্বর নড়াইল সদরের দেওয়ানী আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোঃ এনামুল হক তপশীলভূক্ত জমিতে স্থিতিবস্থা বজায় রাখার আদেশ জারি করেন। ফলে পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে নড়াইল পৌরসভার মেয়র আঞ্জুমান আরা বলেন, পৌরসভা পৌরবাসীর কাংখিত সুবিধা ও সেবা প্রদানের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি জেলা পরিষদ নড়াইল পৌরসভার বিরুদ্ধে তপশিল বর্ণিত জমিতে উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ করতে আদালতে স্থিতিবস্থার মামলা করায় কালিদাস ট্যাংক পুকুর বিউটিফিকেশন,মৌসুমী সুপার মার্কেট পূনঃনির্মাণ, চান্দি আধুনিকীকরণ ও অত্যাধুনিক কশাইখানা নির্মাণ কাজ কাজ বন্ধ হয়েছে। চলমান কাজ বন্ধ হলে পৌর নাগরিকদের ভীষণ ক্ষতি সাধন হবে। পৌরসভার দাপ্তরিক কাজও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এছাড়া জরুরি ভিত্তিতে পৌর ভবন, মৌসুমি সুপার মার্কেটসহ কিছু কাজ করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। ফলে আদালতের এ আদেশটি শহরের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে রদ ও রহিত হওয়া আবশ্যক। উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় নড়াইলবাসী যেন বঞ্চিত না হয় সেজন্য বাস্তবায়নাধীন উন্নয়ন কাজকে এগিয়ে নিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের সচিব ও জেলা প্রশাসক মহোদয়ের বিশেষ দৃষ্টি ও সহযোগিতা কামনা করেন।
এফআর/অননিউজ