নড়াইলের কালিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার বাম হাত বিচ্ছিন্নসহ হত্যা চেষ্টার জের ধরে বিবদমান দুটি গ্রæপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উভয়পক্ষ ঢাল-সড়কি সহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রাদি নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে এক মহিলাসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন আহতদেরকে কালিয়া উপজেলা কমপ্লেক্স ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে কালিয়া উপজেলার বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করায় আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকরা রয়েছে।
জানা গেছে, কালিয়া উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাবরা-হাচলা ইউনিয়নের বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন পিকুলের সাথে একই এলাকার বাসিন্দা কালিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আতাউর রহমানের দ্ব›দ্ব চলে আসছে। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে পিকুলের কাছে হেরে যায় আতাউর। এর পর দু’নেতার দ্ব›দ্ব আরও চরমে ওঠে।
আতাউরের ভাষ্য, গত রোববার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে কাঞ্চনপুর জাহাঙ্গীর মুন্সির বাড়ির সামনে পৌঁছালে ওৎ পেতে থাকা চেয়ারম্যান মোজাম্মেলের লোকজন কুপিয়ে তার বাম হাত বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। এরই জেরে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে আহত আতাউরের সমর্থক নুরু মুন্সীর স্ত্রী জাহিদা বেগমকে তার বাড়িতে গিয়ে প্রতিপক্ষ ইউপি চেয়ারম্যান পিকুলের লোকজন বেদম প্রহর করে। জাহিদার অপরাধ সে আতাউরকে জখমের দু’আসামি তহিদ শেখ ও লেকবার শেখকে পুলিশে ধরিয়ে দিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছে। এদিকে জাহিদাকে মারধরের খবর গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে দু’গ্রæপের মধ্যে ঢাল, সড়কি, দা, ভেলা, টেটা নিয়ে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় দু’পক্ষের কমপক্ষে অন্তত ১২ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে কাঞ্চনপুর গ্রামের মৃত মোকছেদ শেখের ছেলে মোহাম্মদ মন্নান(৫০), সাহেব মোল্যার ছেলে মো. কামীম মোল্যা (৩২), সবুর গাজীর ছেলে কামাল গাজি (৩৫), ফারুক গাজীর ছেলে মোহাম্মদ মিরাজ গাজীসহ (৩৯) বেশ কয়েকজনকে কালিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন পিকুলকে ফোন করলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
কালিয়া থানার ওসি খন্দকার শামীম উদ্দিন বলেন, ‘আতাউরকে জখমের ঘটনায় থানায় মামলায় মামলা হয়েছে। এ মামলার দু’ আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) দু’পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। তবে এলাকার পরিস্থিতি আপাতত শান্ত রয়েছে। পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এই এলাকার আধিপত্য নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।’ #